ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কুইসার গ্রামে জনসাধারণের চলাচলের জন্য প্রায় ২০ বছর আগে রাস্তায় জায়গা দান করেন সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ। কিছু দিন আগেও একাটুনা ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি বরাদ্দ থেকে রাস্তার উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। এলাকার প্রায় কয়েক হাজার মানুষ ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করেন। কিন্তু সম্প্রতি ওই রাস্তাকে পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করছেন এ এলাকার আজিজুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকালে রাস্তায় জায়গা দানকারী সৈয়দ কালাম আজাদ এর চাচাতো ভাই, ভাতিজা ও স্বজনদের উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা করার অভিযোগ উঠেছে ছয়ফুল ইসলাম সাপ্পুল, আজিজুর রহমান, তার ভাই ও ভাতিজাদের বিরুদ্ধে।
হামলায় আহতরা হলেন, সৈয়দ মিলাদ আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সৈয়দ জাবেদ আলী, সৈয়দ বোরহান উদ্দিন বুলবুল, সৈয়দ ফয়ছল আলী ও সৈয়দ হাসেম আলী। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতদের মধ্যে সৈয়দ নজরুল ইসলামের অবস্থা আশংকাজন হলে সিলেট ওসামানী হাসপাতালে বদলি করা হয়।
এঘটনায় রাস্তায় জায়গা দানকারী সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ এর চাচাতো ভাই সৈয়দ মিলাদ আহমদ বাদী হয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় ৬ আগষ্ট রাতে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ১৩/২০৯)। আসামীরা হলেন (১) আজিজুর রহমান (২) ফয়জুর রহমান (৩) ছয়ফুল ইসলাম সাপ্পুল (৪) সারজুল ইসলাম সহ অজ্ঞাত নামা আর ৩/৪ জন।
আহতদের অভিযোগ, হামলাকারীরা ঘটনার আহত ব্যক্তিদের ফাসানের জন্য ঘটনার পরপরই ৯৯৯ কল সেন্টারে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আনেন। এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মৌলভীবাজার মডেল থানার এসআই মহসিন আহমদ বলেন, এলাকায় এ জায়গা নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে কিন্তু আজিজুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা তাদের দাবির স্বপক্ষে কাগজ দেখাতে পারেনি। এদিকে ঘটনার দিন মামলারবাদী সৈয়দ মিলাদ আহমদ রাস্তার গর্ত ভরাট করতে গেলে আজিজুর রহমান তার পরিবারের সদস্যরা অতর্কিত হামলা চালায়। আজিজুর রহমানের পরিবারের নারী সদস্য সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে আহত হয়েছেন? না সাজানো হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে সাজানো হতে পারে।
জায়গা দাবিকারী ছয়ফুল ইসলাম সাপ্পুল বলেন, সৈয়দ মিলাদ আহমদ আমার স্ত্রীর উপর অতর্কিত হামলা চালালে সেও আত্মরক্ষার্থে তাদের কাছ থেকে দা কেড়ে এনে হামলা করে। পরে আমরাও জড়িয়ে যাই। সৈয়দ মিলাদ আহমদ এর পরিবার আমাদের বিভিন্ন জায়গা দখলে নেয়ার জন্য বারবার চেষ্টা করছে। এ জায়গা নিয়ে চেয়ারম্যান সহ একাধিকবার বৈঠকে বসা হলেও সমাধান হয়নি। সৈয়দ মিলাদ আহমদ জোরপূর্বক দখলে নিতে চায়।
এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য নেছার আহমদ বলেন, উভয় পক্ষই রাস্তার জায়গাকে তাদের ব্যক্তিগত দাবি করছেন। এনিয়ে অনেক বার বসা হয়েছে কিন্তু সমাধান হয়নি। আজিজুর রহমানের পরিবারের কাছে জায়গার কাগজ চাওয়া হলে এপর্যন্ত তারা দলীল দেখাতে পারেনি।
একাটুনা ইউপি চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান বলেন, এটা সরকারি রাস্তা থাকায় আমি কাজ করিয়েছি। কিন্তু তখন কেউ তাদের রাস্তা দাবি করেনি। আমার কাছে কোনো অভিযোগও দেয়নি। উভয় পক্ষের পূর্বের কিছু সমস্যা ছিল এটা সমাধান করে দিয়েছি। সংঘর্ষ চলাকালিন সময়ে একটি পক্ষ ৯৯৯ ফোন দিয়ে উল্টো তারাই বিপদে পড়েছে।