বিশেষ প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর মাসুদ মিয়ার নির্দেশে রুবেলকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করছে নিহতের পরিবার। এ হত্যাকান্ডে নিহত রুবেলের মা ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাসুদ আহমদকে প্রধান আসামী করে মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং ১৫)। এ মামলায় কাউন্সিলার মাসুদসহ ২০ জনকে আসামী করা হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আনোয়ার, তুহিন মিয়া, বিল্লাল, মাছুম ও বারিক মিয়াকে আটক করেছে। তবে পুলিশ বলছে এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। নিহত রুবেল পৌর শহরের হিলালপুর এলাকার মৃত শহীদ উল্ল্যাহর ছেলে। পৌর শহরের বড়কাপন এলাকায় শনিবার বিকালে রুবেল কে মারা হয়।
মামলার এজহার থেকে জানা যায়, শনিবার বিকালে বাজার করতে পৌর শহরের পশ্চিম বাজারে যাওয়ার পথে মামলায় উল্লেখিত আসামীগণ পরিকল্পিত ভাবে কুদরত উল্ল্যাহ রোডে চোর চোর বলে নিহত রুবেলকে দাওয়া করে। এসময় রুবেল আত্মরক্ষার জন্য একটি গ্রোসারী দোকানে ঢোকে। দোকান থেকে আসামীরা তাকে জোরপূর্বক টেনে সিএনজিতে তুলে মামলার ৩ নং আসামী তুহিন মিয়ার বাড়ির পিছনে নিয়ে যায়। এসময় মামলার প্রধান আসামী কাউন্সিলার মাসুদ মিয়ার হুকুমে তার অনুসারী মামলায় উল্লেখিত আসামীরা লোহার রড, জিআই পাইপ, কাঠের বর্গা ও ধারালো দা দিয়ে রুবেলকে এলোপাতারি মারপিঠ করে মৃত্যু নিশ্চিত জেনে পালিয়ে যায়। পরে ৯নং আসামী আউয়াল মিয়া রুবেলকে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে ওই টমটম দিয়ে নিহত রুবেলকে মৌলভীবাজার ২৫০শয্যা হাসপাতাল নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রুবেল মারা যায়।
এঘটনায় নিহত রুবেলের মা ফাতেমা বেগম বলেন, ৫ মাস আগে বারীক মিয়ার ছেলের সাথে আমার ছেলের ঝগড়া হয়। পরবর্তীতে ওই ঝগড়া শেষ করার জন্য একাধিকবার কমিশনার মাসুদ মিয়ার কাছে গেলে তিনি সমাধান করে দেননি। আজ কাল কিংবা পরশো বলে দিন অতিবাহিত করেন। কিন্তু সমাধান করেননি। এই শত্রুতার জের ধরে মাসুদ মিয়া উনার সন্ত্রাসী দিয়ে আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারধর করে হত্যা করেন। সন্ত্রাসীরা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দা দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। শরীরের একাধিক জায়গায় ডিল মেশিন দিয়ে ছিদ্রের আঘাত রয়েছে। প্র¯্রাাবের রাস্তায়ও প্লাস দিয়ে চাপ দেয়। নিহত রুবেলের মা আরোও বলেন, আমার ছেলে গুরুত্বর আহত হওয়ার পর পানি চাইলে তাকে প্র¯্রাব খাওয়ানো হয়।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, (২) বাবুল (৩) তুহিন মিয়া (৪) রুমান (৫) আশরাফ (৬) সাহেল (৭) আলীম (৮) রাজন (৯) রুমান (১০) সাবুল (১১) রুশেদ (১২) উসমান (১৩) বাপ্পি (১৪) আনোয়ার (১৫) আব্দুল্লাহ (১৬) বিল্লাল আহমদ (১৭) উমর মিয়া (১৮) আনোয়ার হোসেন চৌধুরী (১৯) বদরুল মিয়া ও (২০) আবুল কালাম।
সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম তাজ বলেন, আমি রুবেলকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় হাসপাতাল দেখতে গেলে সে বলেছে, আসামীরা তাকে বেঁধে ব্যাপক মারধর করেছে এবং পানি চাইলে পানির পরিবর্তে প্র¯্রাব খাওয়ায়।
এবিষয়ে জানতে পৌর কাউন্সিলর মাসুদ মিয়া’র ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিলে উনার স্ত্রী নাহিদা ফোন রিসিভ করে বলেন, মাসুদ আহমেদ বাহিরে আছেন। ঘরে আসলে বলব আপনাকে ফোন দেয়ার জন্য।
মৌলভীবাজার মডেল থানার অফিসর ইনচার্জ আলমগীর হোসেন বলেন, আসামীদেরকে রিমান্ডে নেয়ার প্রস্তুতি চলছে। তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। যে কেউ হোক না কেন। এঘটনায় কোনো ছাড় দেয়া হবে না।