ষ্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অজ্ঞাত বস্তাবন্দী নারীর লাশ উদ্ধারের সাড়ে ১৩ ঘন্টায় পরিচয় ও হত্যাকারীকে সনাক্ত করেছে পুলিশ। ওই নারীর নাম ডলি আক্তার (২৮)। সে ঝিনাইদহ সদরের বর্ধনপুর গ্রামের মৃত ফেলু মন্ডলের মেয়ে। বস্তার গায়ে লেখা নামের সূত্র ধরে পুলিশ আসামীকে আটক করে।
বুধবার (১৯ মে) দুপুরে এসপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া। তিনি জানান, ১৯ মে রাত ৩টার দিকে একটি বস্তার গায়ে লেখা এক ব্যক্তির নামের সূত্র ধরে পুলিশ তার স্বামী মসুদ মিয়াকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে। সে উপজেলার রামনগর গ্রামের মৃত এখলাছ মিয়ার ছেলে। ১৯ মে রাত ৩টার দিকে শ্রীমঙ্গল থানাধীন রামনগরস্থ তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল, অতিরিক্ত পুলিশ পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), আশরাফুজ্জামান এর নেতৃত্বে শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুছ ছালেক, ওসি তদন্ত হুমায়ুন কবির এই ক্লুলেস হত্যা রহস্য উদঘাটনে অভিযান পরিচালনা করে খুনিকে সনাক্ত ও আটকে সক্ষম হন।
গত ১৮ মে উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের পশ্চিম বেলতলী এলাকার উদনা ছড়া ব্রীজের নীচ থেকে অজ্ঞাত বস্তাবন্দী এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, খুনি যে বস্তায় ভরে লাশ ব্রীজের নীচে ফেলে দেয়, তদন্ত কর্মকর্তারা সেই বস্তার গায়ে লেখা অনিক নামের এক ব্যক্তির সন্ধান পায়। পুলিশ শহরের সাইফুর রহমান মার্কেটের পুরাতন কাপড়ের ব্যবসায়ী দুই ভাই অনিক ও জুয়েলের কাছ থেকে জানতে পারেন গত ১৭ মে, তার পূর্বপরিচিত মসুদ বস্তাটি সংগ্রহ করে। এ সূত্র ধরে পুলিশ মসুম মিয়াকে আটক করলে সে হত্যার কথা স্বীকার করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে মসুদ মিয়া এই হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়। মসুদ জানায় সে এলাকায় সুদের কারবার করে। ৭-৮ মাস পূবে পরিচয় সূত্রে ডলি আক্তারকে বিয়ে করে। এর আগে মসুদ আরো ৪টি বিবাহ করে। বিভিন্ন নারীর সাথে তার পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। এনিয়ে ডলির সাথে পারিবারিক কলহের সূত্রপাত হয়। এর এক পর্যায়ে গত ১৭ মে রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওড়না পেঁচিয়ে ডলিকে স্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ একটি প্লাষ্টিকের বস্তায় ভরে। পরে একটি সিএনজি অটোরিক্সা করে মরদেহের বস্তা উদনাছড়া এলাকায় নিয়ে যায়। এমসয় চলন্ত সিএনজি আটোরিক্সা থেকে বস্তাটি ব্রিজের উপর হতে নিচে ফেলে দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হাসান মোহাম্মদ নাছের রিকাবদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) এ.বি.এম. মোজাহিদুল ইসলাম (পিপিএম), শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুছ ছালেক প্রমুখ।