ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
১২ একর ১২ বিগা ১২ পোয়া ১২ ছটাক জায়গা জুড়ে স্থাপতি প্রায় ৪ শত বছরের পুরাতন মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কমলারাণীর দিঘী। প্রতি বছর দিঘী দেখতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে। কিন্তু সুষ্ঠ রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে দিঘীর পাশর্^বর্তী বট গাছের নিচে প্রতিনিয়ত জুয়া ও মাদকের আসর বসে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নতুন জুয়ারীরা এসে আসরে যুক্ত হচ্ছেন। জুয়া ও মাদকের সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে এলাকার যুব সমাজও। যার ফলে এলাকায় বাড়ছে অপরাধ, চুরি ও ছিনতাই। স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারণে এমনটি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে এ দিঘীর চারপাশ জুড়ে পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন। স্মৃতি বিজড়িত দিঘীর ঘাটে বসে নানান ভঙ্গিতে ছবিও তুলছেন তারা। এদিকে দিঘির পিছনের বড় বট গাছের নিচে একদল যুবক প্রকাশ্যে জোয়া খেলায় মেতেছেন। সবার হাতে টাকার ছড়াছড়ি।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়, প্রতিদিনই কমলারাণীর দিঘীকে কেন্দ্র করে জুয়া ও মাদকের আসর বসে। স্থানীয়রা জুয়া খেলায় বাঁধা দিলে হয়রানির শিকার হতে হয়। এ ভয়ে কেউ কিছু বলেন না। অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট জড়িত। একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এই সিন্ডিকেটের মূলহুতা সাবেক এক ইউপি সদস্য।
পর্যটক ও স্থানীয়দের মতে, এই জায়গাটা সংস্কার করে সংরক্ষণ করলে দেশের মধ্যে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করবে। এমনকি জেলার উন্নয়নেও এটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
নাট্যকার সাইফুল্লাহ খালেদ বলেন, আমাদের একটি নাটকের শুটিংয়ের জন্য বট গাছের নিচের একটা সিন নেয়া জরুরি ছিল। কিন্তু এখানকার জোয়ারীরা আমাদের বাঁধা দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। আমার ধারণা মতে এরা মাদকদ্রব্যও সেবন করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শাকিল মিয়া বলেন, কমলারানীর দিঘী ও তৈমুছ শাহর মাঝারের উত্তর পাশে জুয়া ও মাদকের আসর বসানো হয়। উপজেলা প্রশাসন ও থানাকে বারবার বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে পুলিশ আসার আগেই জুয়াড়ীরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়দের পাশাপাশি এই সিন্ডিকেটের সাথে ক্ষমতাসীন দলের অনেকেই জড়িত। তিনি আরও বলেন, জুয়া খেলার এক পর্যায়ে এরা মদ ও ইয়াবা সেবন করে।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল জানান, এখানে মাদক বসতো অবগত ছিলাম না। খুব শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে অভিযান করব।