বিশেষ প্রতিনিধিঃ
মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরপরই প্রচারণায় সরব ডজন খানেক সম্ভাব্য প্রার্থী। তাদের সমর্থকরাও নিজেদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। ইতিমধ্যে কোথাও কোথাও অনেকেই পছন্দের প্রার্থীর সমর্থনে মতবিনিময় সভাও শুরু করেছেন। ভোটারদের দোয়া ও আশীর্বাদ চাচ্ছেন তারা। কিন্তু নিরব রয়েছেন ভোটাররা। এখন পর্যন্ত কোনো ভোটারকে কারো সাথে প্রচারণায় দেখা যায়নি।
এদিকে ক্ষমতাসীন আ’লীগের ডজন খানেক প্রার্থী দলীয় মনোয়য়ন পেতে ছুটছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের ধারে ধারে। অনেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে লবিংও শুরু করেছেন। দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া তারা। কিন্তু সর্বশেষ কে দলীয় মনোনয়ন পাবেন এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। তবে ধারণা করা হচ্ছে ক্লিন ইমেজ ও দলের ত্যাগি নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা চালালেও তারিখ ঘোষণার পর থেকে মাঠে সক্রিয় সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীও। তবে বিএনপি, জাসদ, খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট ও জামায়াতসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীদের প্রচারণায় দেখা যায়নি। ওই সকল দল নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে কি না এখন পর্যন্ত স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও স্বাধীনতা পদকে মনোনীত আলহাজ্ব আজিজুর রহমান করোনা আক্রান্ত হয়ে ১৮ই আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। আসনটি শূন্য হলে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ তফাদার রিজুয়ানা ইয়াসমিন সুমি ৬ই সেপ্টেম্বর অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পান। এরপর ১৪ই সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন ২০ অক্টোবর উপ-নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন।
সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলীর সহধর্মিনী, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সৈয়দা সায়রা মহসীন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিছবাহুর রহমান, গেল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে (স্বতন্ত্র) প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক এমপি ও ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এম শাহীন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, গেল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী এম এ রহিম (সিআইপি), মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জাতীয় পরিষদ সদস্য মো. ফিরোজ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক পুলিশের এআইজি বজলুল করিম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুহিবুর রহমান তরফদার, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আলহাজ্ব সৈয়দ শাহাব উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান বাবুল, জেলা যুবলীগের সভাপতি মো. নাহিদ আহমদ ও আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য সোহেল আহমদ।
নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন বলে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে। গেল জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে (স্বতন্ত্র) প্রতিদ্বন্দ্বী গণফোরামের সাবেক জেলা সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক বকশী ইকবাল আহমদ।
জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্যমতে মৌলভীবাজারের ৭টি উপজেলার ৬৭টি ইউনিয়ন, ৫টি পৌরসভা ও ৭টি উপজেলা মিলে ৯৪৩ জন নির্বাচকম-লীর সদস্য (ভোটার) রয়েছেন।
সাবেক এমপি সৈয়দা সায়রা মহসিন বলেন, এলাকার জনগন আমাকে চাচ্ছে। তবে দল মনোনয়ন দিলে আমি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করব।
ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এম শাহীন প্রতিবেদককে বলেন, মানুষের সেবা করাটাই আমার শখ। এ জন্য একটি জায়গার প্রয়োজন। জেলা পরিষদকে উপযুক্ত মনে করছি। এ পদে নির্বাচিত হলে পুরো জেলার সেবা করার সুযোগ হবে। সেই চিন্তা থেকেই আমি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছি।
জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি সৈয়দ শাহাব উদ্দিন আহমদ বলেন, দলের নির্দেশে প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছি। তবে চুড়ান্তভাবে দল যে সিদ্ধান্ত দেবে আমি সেটা মেনে নিব।
বিএনপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার জন্য এখন পর্যন্ত দলীয়ভাবে কোনো নির্দেশনা আসেনি।