ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মানিক হাওর এলাকায় অতর্কিত হামলা করে ১৫’শ হাঁস ছিনতাই করেছে আলকাব বাহিনীর সদস্যরা। ৬ মে বিকালে এ ঘটনা ঘটে। এতে ৩ জন গুরুত্বর আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন, হাঁসের মালিক জয়নাল মিয়া, হাবিজ মিয়া ও রকিজ মিয়া। এঘটনায় আহতদের চাচাতো ভাই আবুল কালাম বাদী হয়ে ৬ মে ১৭ জনকে আসামী করে মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং ১০/১০০)। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার ২নং আসামী আলী হোসেন ও ৯ নং আসামী তোয়াহিদ মিয়াকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। মৌলভীবাজার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেন বলেন, বাকী আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য তাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
জানা যায়, হাঁসের প্রতিদিনের ডিম বিক্রি করে জয়নাল মিয়ার পরিবার চলত। এটাই ছিল তাদের আয়ের একমাত্র উৎস। কিন্তু আলকাব বাহিনীর সদস্যরা জোরপূর্বক হাঁস নিয়ে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন জয়নাল মিয়ার পরিবারের সদস্যরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে চিকিৎসার ব্যয় বহন করাও তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। করোনা সংকটে পরিবারের দৈনন্দি খরচ জোগাতেও হিমশিম খাচ্ছে এই পরিবার।
মামলার এজহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৬ মে বিকালে জয়নাল মিয়া মানিক হাওর থেকে তার ১৫’শ হাঁস নিয়ে প্রতিদিনের মতো বাড়ি ফিরছিলেন। আটঘর এলাকার একলিম মিয়ার বাড়ির সামনে আসা মাত্র পূর্ব থেকে ওঁৎপেতে থাকা আলকাব বাহিনীর সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ হামলায় সদর উপজেলার আটঘর এলাকার মকতর মিয়ার ৩ ছেলে জয়নাল মিয়া, হাবিজ মিয়া ও রকিজ মিয়া গুরুত্ব আহত হন। আহতদের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে আসামীরা হাঁস নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাদের অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাদেরকে সিলেট ওসমানী হাসপাতলে রেফার্ড করেন। এদের মধ্যে জয়নাল মিয়ার অবস্থা আশংকাজন হওয়ায় তাকে ঢাকা বক্কব্যাধি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি সেখানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জালড়ছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় আলকাব বাহিনীর সদস্যরা দীর্ঘ দিন যাবত এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এলাকার সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে দাদন ব্যবসা সহ নানা অপকর্ম করছে ওই বাহিনী। জায়গা দখল, হামলা, মামলার ভয়, গবাদিপশু ছিনতাই সহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে ওই বাহিনীর বিরুদ্ধে। তাদের এই অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারছে না। প্রতিবাদ করলে হামলা মামলার স্বীকার হতে হয় স্থানীয়দের।
এবিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ এনামুল হক রাজা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার সাথে সাথে মামলা হয়েছে। ২ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। আলকাব মিয়া’র উপর স্থানীয়দের ক্ষোভ রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমিও এরকম শুনতেছি। সে বাহিরা জেলা থেকে এখানে এসে স্থানীয় কয়েকজনের ছত্রছায়ায় এমন কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
আলকাব মিয়া বলেন, জয়নাল মিয়া উনার হাঁসের সাথে আমার ৫০টি হাঁস নিয়ে যাচ্ছিলেন। হাঁস নিতে বাঁধা দিলে তাদের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের লোক আহত হয়েছেন। তবে জায়গা দখল, হামলা, মামলার ভয়, গবাদিপশু ছিনতাই সহ নানা অপকর্মের অভিযোগ গুলো তিনি অস্বীকার করেন।