সারা বিশ্বের মানুষ আজ বড় অসহায় হয়ে কঠিন সময় পাড় করছে। বাংলাদেশে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন হুজুর শবেবরাতের দোয়ার রেওয়াজ বজায় রাখতে। কেমন মানবজাতি আমরা?
যেখানে সরকার নিষেধ করছেন প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বাহির না হতে সেখানে আদেশ অমান্য করে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন অথবা কেউ দাওয়াত দিলে নিচ্ছেন। একবার কি ভেবেছি, আমরা করোনা নিয়ে যাচ্ছি কিনা?
নিরবে নিভৃতে সৃষ্টিকর্তার নাম নিলে তিনি সাড়া দিতে কৃপণতা করেন না সেটা ভালো করে জানা খুব দরকার কি হুজুর?
নবি করীম স. বলেছেন, মহামারী দেখা দিলে ঘরে নামাজ আদায় করে নিতে। সেখানে পণ্ডিত মশাই গেয়ে গেয়ে বলছেন, সরকার মসজিদে যেতে নিষেধ করছে। আরে, সরকার জনসাধারনকে এই কঠিন সংকটে মানুষকে নিরাপত্তা দিতে যা করণীয় তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে যাচ্ছে আর আমি হুজুর হাদিয়া নিতে সুযোগ হাত ছাড়া করতে পারছি না সেটা গোয়ার্তমি ছাড়া কি হতে পারে?
প্রিয় পাঠাক মনে করতে পারেন কেন হুজুর কে নিয়ে লিখছি? হুজুরকে নিয়ে লিখতে আমার কোনো ইচ্ছে নেই, তবে লিখতে বাধ্য হলাম।
শীতকাল আসলে গ্রামে গঞ্জে হাট বাজারে পাড়া মহাল্লায় কত যে ওয়াজ মাহিফল হয় সেটা হিসাব রাখা দুষ্কর। যাকে প্রধান অতিথি করে বিশেষ অতিথি করে মাহিফলে আনতে হয় বড় অংকের টাকা; মানে হাদিয়া দিতে হয়, না হলে পরের বছর মাহিফলের তারিখ নেই বলে তাড়িয়ে দিবে।
হুজুর ঘন্টাখানেক সময় দিয়ে খাওয়া দাওয়া শেষ করে চলে গেলেন হাদিয়া নিয়ে। একবার কি ভেবেছেন সেই টাকা কতটুকু হালাল করে নিয়েছি? কিন্তু না চিন্তা করেন নি?
আজ মানুষ লকডাউনে ঘর বন্দী সময় পাড় করছে। দেখিনি তো হাতে গুনা দুয়েকজন হুজুর ছাড়া যারা বড় অংকের হাদিয়া নেন তাদের কেউ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। সেটা কেমন মানবতা?
মাহিফলে চাঁদা কালেকশন করতে গিয়ে কত লম্বা লম্বা কাহিনি শুনালেন। আপনি নিজেই জানেন আয়োজকরা চাঁদা থেকে হাদিয়া দিবে আপনাকে। নিলেনও সেই হাদিয়া। কিন্তু আজ এই দুর্যোগ দুর্ভিক্ষের দিনেও সাহায্য করছেন না, অসহায় মানুষের খোঁজ নিচ্ছেন না। তারা খুঁজেও পাচ্ছে না আপনাকে। এ কেমন হুজুর এ কেমন মানবতা? মনে রাখবেন শেষ বিচারের দিন হিসাব দিতে হবে আপনিও।