স্টাফ রিপোর্টারঃ দেশবাসীর কাছে মৌলভীবাজার জেলা প্রবাসী অধ্যুষিত হিসেবে অনেকটাই পরিচিত। নারী-পুরুষ সবারই উদ্দেশ্য থাকে লেখাপড়া শেষে ইউরোপে পাড়ি জমানো। বিশেষ করে মেয়েরা বিদেশী ছেলে বিয়ে করে ইউরোপ পাহাড়ি জমাতে চায়। চাকুরি কিংবা ব্যবসার প্রতি তাদের কোনো আগ্রহ নেই বললেই চলে। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পরিচালিত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে সফল হয়েছেন ২৮ জন নারী। এদের অধিকাংশই এখন একাধিক প্রতিষ্ঠানের মালিক। অনার্স ও মাষ্টার্স পাস করে তারা চাকুরির দিকে না চেয়ে নিজের আত্মকর্মসংস্থান করার পাশাপাশি অনেক বেকার শিক্ষিত মেয়েকে চাকুরি দিয়েছেন।
উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সারা দেশের ন্যায় ২০১৯ইং সালের সেপ্টেম্বর মাসে মৌলভীবাজারে এ প্রকল্পের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রতি ব্যাচে ২৫ জন উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা হয়। চলতি মাস পর্যন্ত ৭টি ব্যাচে ১’শ ৭৫ জন বেকার যুবক-যুবতীকে প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এর মধ্যে নারী উদ্যোক্তা ছিলেন ৩৫ জন। এর মধ্যে ৩০ জন নারীই ব্যবসা শুরু করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রথম ব্যাচের নারী উদ্যোক্তা বড়লেখা উপজেলার লুৎফা বেগম গার্মেন্ট শুরু করেছেন। তার গার্মেন্টে ৪/৫ জন মহিলারও আত্মকর্মসংস্থান হয়েছে। শিউলী আক্তার আইটি সেন্টার শুরু করেছেন। দ্বিতীয় ব্যাচের প্রশিক্ষণার্থী কুলাউড়া উপজেলার সুমনা আক্তার দেশীয় ফলের আচার ও বুটিকস তৈরি শুরু করেছেন। সদর উপজেলার মরিয়ম আক্তার রিমি নিজের ডিজাইনকৃত বুটিকস তৈরি করে বিক্রি করছেন। জেবিন আক্তার চৌধুরী লেডিস সপ ও টেইলারিং শুরু করেছেন। এছাড়াও এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সফল হয়েছেন সদর উপজেলার তাহমিনা ইসলাম তাম্মী, লিনা বেগম চৌধুরী, পপি আক্তার, রোখসানা নাসরীন, সাদিয়া আক্তার, মিতালী রানী দাস, ফারহানা আক্তার রুমা, লক্ষী রানী রায়, মিতু বেগম, রেহানা বেগম, মৌ দেব, লাকী বেগম, শেখ জুলিয়া তানিয়া সহ অনেক মেয়েরাই প্রধানমন্ত্রীর এ মহতি উদ্যোগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সফল হয়েছেন। এখন অনেকটাই তারা আত্মনির্ভরশীল।
এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্পের মৌলভীবাজার জেলার প্রশিক্ষক সমন্বয়ক মোঃ নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, মৌলভীবাজারের নারীরা উদ্যোক্তা হতে খুবই আন্তরিক ও আগ্রহী। ইতিমধ্যে এখান থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে অনেকেই আত্মকর্মস্থংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বেকার মহিলাদের কাজের ব্যবস্থা করছেন। এখানে ব্যাংক ঋণ সহজ ভাবে দেয়া গেলে এবং একটা মেগা মার্কেট প্লেস তৈরি করতে পারলে এজেলার নারীদের আরও এগিয়ে নেয়া সম্ভব।
মৌলভীবাজারে সফল ২৮ তরুণ নারী উদ্যোক্তা
