ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
মৌলভীবাজার পৌর এলাকার পশ্চিম ধরকাপনে মবশ্বির-রাবেয়া ট্রাস্টের উদ্যোগে ৭ম বারের মতো ৫দিন ব্যাপী ফ্রি চক্ষু শিবির শুরু হয়েছে। চক্ষু শিবিরে বিনামূল্যে দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা শেষে চোখের ছানিপড়া ১৩৫ জন ও চোখের নেত্রনালী (ডিসিআর) ৬৭ জন রোগীকে অপারেশনের জন্য বাছাই করা হয়।
শনিবার ১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টায় মৌলভীবাজার বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থায় ফ্রি চক্ষু শিবিরের প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মৌলভীবাজার ৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, চক্ষু শরীরের প্রধান একটি অঙ্গ। সারা শরীরের সকল অংশ যদি ঠিক থাকে আর চক্ষু যদি না থাকে তাহলে চলা খুব কঠিন। মবশ্বির রাবেয়া ট্রাষ্ট দীর্ঘদিন থেকে ফ্রি চক্ষু শিবির কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এভাবে যদি তাদের মতো সমাজের বৃত্তবানরা এগিয়ে আসেন তাহলে গরীব এবং অসহায়রা চিকিৎসা পেয়ে অন্ধত্ব থেকে রক্ষা পাবে। এতে এগিয়ে যাবে সমাজ ও দেশ।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, এককভাবে দেশ এবং সরকার এগিয়ে যেতে পারে না। মবশ্বির রাবেয়া ট্রাষ্ট যেভাবে চিকিৎসা সেবা গরীবদের দিচ্ছে তেমনি সমাজের বৃত্তবানরা অন্যান্য চিকিৎসা সেবা দিলে দেশ এগিয়ে যাবে। ট্রাষ্টের এ কার্যক্রমের মাধ্যমে জেলা ব্যাপী ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। এই কাজটি একটি সওয়াবের কাজ।
মবশ্বির-রাবেয়া ট্রাষ্টের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ সৈয়দ জুবায়ের আহমদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মৌভীবাজার পৌর সভার মেয়র মোঃ ফজলুর রহমান, বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদের সিনিয়র সহ সভাপতি লেখক, গবেষক ও মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিব, চক্ষু হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদের সহ সভাপতি ডাঃ ছাদিক আহমদ, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি আবদুল হামিদ মাহবুব, বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মশাহিদ আহমদ, ট্রাষ্টের পরিচালক সৈয়দ হুমায়েদ আলী শাহীন।
ট্রাষ্টের নির্বাহী পরিচালক এস এম উমেদ আলীর পরিচলনায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক বংলার দিন পত্রিকার সম্পাদক বকসী ইকবাল আহমদ, দিপ্ত টিভির মৌলভীবাজার প্রতিনিধি বকসী মিছবাহ উর রহমান, মৌলভীবাজার পাবলিক লাইব্রেরীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক নজরুল ইসলাম মুহিব, জামেয়া দ্বীনিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মাওলানা মাসুদ আহমদ, মানবজমিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মুু. ইমাদ উদ দীন।
আরো উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক মৌমাছি কন্ঠের সম্পাদক শেখ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, ঢাকা ট্রিবিউনের মৌলভীবাজার প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম, ক্যামেরা পার্সন মঞ্জু বিজয় চৌধুরী, দৈনিক জাগরনের জেলা প্রতিনিধি আশরাফ আলী, পাতাকুঁড়ির স্টাফ রিপোর্টার জনি বেগম, পাতাকুঁড়ির কলেজ ক্যাম্পাস প্রতিনিধি সাইফুল্লাহ হাসান।
সৈয়দ মাহমুদ আলী, সৈয়দ জাহিদ আলী, সৈয়দ মুজতাহিদ আলী, সৈয়দ ওসমান গণি (ইফতি), সৈয়দ শাহ্ সাব্বির আহমেদ, সৈয়দ শাহ্ রেদওয়ান উদ্দীন, সৈয়দ শাহ্ তৌফিক এলাহী তিয়াস, শাহ্ মুকিম উদ্দীন আহমদ, রাফি চৌধুরী, মুস্তাকিম জামান চৌধুরী, মোঃ আবু বক্কর নবিন তালুকদার, সৈয়দ মোঃ সামিন ইয়াসার, সৈয়দ মোঃ সাকিফ হাসনাত, সৈয়দ মোঃ সাফাত আফসার প্রমুখ।
ট্রাষ্টের চেয়ারম্যন বলেন, সমাজে অসহায় ও আর্তপীড়িত মানুষের কল্যাণে কাজ করার মধ্যে রয়েছে পরম তৃপ্তি। সৃষ্ঠিকর্তাকে ভালবাসতে হলে তার সৃৃষ্ট জীবকে ভালবাসতে হবে। আশরাফুল মখলুকাত সৃষ্টির সেরা জীব হচ্ছে মানুষ। তাই মানুষের সেবার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তোষ অর্জন করা সম্ভব। এলাকার অসহায় ও দারিদ্র মানুষ অর্থাভাবে ঠিকমত চিকিৎসা করতে না পারায় নানা রোগে ভুগে থাকেন। চোখ হচ্ছে মানুষের অমূল্য সম্পদ। তাই চোখের যতœ নিতে হবে। সর্বোপরি সমাজের অবহেলিত মানুষের কল্যাণে বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে।
ফ্রি চক্ষু শিবিরে ২ হাজার রোগীকে দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা শেষে এ বছর চোখের ছানিপড়া ১৩৫ জন ও চোখের নেত্রনালী (ডিসিআর) ৬৭ জন রোগীকে অপারেশনের জন্য বাছাই করা হয়। এ ছাড়াও ৪১০ জনকে চশমা সহ অন্যান্যদের ঔষধ প্রদান করা হয়েছে।
১ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছানিপড়া রোগীদের বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে অপারেশন কাজ চলবে। চোখের নেত্রনালী (ডিসিআর) অপারেশন ১০ ফেব্রুয়ারি শুরুহবে এবং প্রতিদিন ১০ জন রোগীর অপারেশন করা হবে।
উল্ল্যেখ্য ২০১৯ সালে চক্ষু শিবিরে ছানীপড়া রোগী ১৮৪ জনকে ও চোখের নেত্রনালী (ডিসিআর) ৭০ জন রোগীকে অপারেশন করা হয়।
এছাড়া ২০১৮ সালে চক্ষু শিবিরে ছানীপড়া রোগী ২১০ জনকে ও চোখের নেত্রনালী (ডিসিআর) ৭০ জন ২০১৭ সালে ছানীপড়া রোগী ১৯৫ জনকে ও চোখের নেত্রনালী (ডিসিআর) ৫১ জন রোগী, ২০১৬ সালে ১২০ জন ছানীপড়া, ২০১৫ সালে ১১৭ জন এবং, ২০১৪ সালে ৯০ জন ছানীপড়া রোগীকে অপারেশন শেষে চোখে লেন্স সংযোজন করা হয়।
মবশি^র রাবেয়া ট্রাষ্ট চক্ষু সেবার পাশাপাশি গৃহ নির্মান, রিক্সা বিতরণ, পবিত্র রমজান মাসে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, হজ¦ প্রশিক্ষণ, অসহায় ও এতিমদের জন্য নগদ অনুদান প্রদান সহ আর্থ-মানবতার সেবায় বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে।