স্টাফ রিপোর্টারঃ গাছে হলুদ ও গাঢ়ো সবুজ ছোপ ছোপ করা মোজাইক করা পাতা দেখা যায়। বাড়ন্ত পর্যায়ের গাছের কা- ও পাতায় এ রোগের আক্রমণ। মৌলভীবাজারের জুড়ীতে শীমে ভাইরাস জনিত এই মোজাইক রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। জুড়ী উপজেলার বাছিরপুরে ভাইরাসজনিত শীমের মোজাইক রোগের আক্রমণে অনেক চাষী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এ রোগের প্রাদূর্ভাবে শীম গাছ মারা গেছে অনেক কৃষকের।
তেমনি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের একজন ইসলাম উদ্দিন। প্রতি বছর রবিশস্য হিসেবে মাঠে শীম, বরবটি, শসা, করোলা, লাউ, টমেটোসহ বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ করেন। বিশেষ করে শীতকালীন সবজি শীমের চাষ বেশী করেন তিনি। ফলনও ভালো হয়। কিন্তু এবছর মোজাইক রোগের আক্রমণে তার বেশীর ভাগ শীম গাছ মারা গেছে। কয়েকটি গাছে ফুল দিলেও ফুল মারা যায়।
তিনি জানান, গত বছর তার মাঠ থেকে প্রতিদিনে ১৫-২০ কেজি করে শীম গাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু এবছর শীমের পাতা হলুদ হয়ে গাছগুলো ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছে। এবং কিছু গাছ মারাও গেছে।
এরকম রোগে শীম নষ্ট হয়েছে হাফিজুর রহমান, আছাদ উদ্দিন ও সিরাজুল ইসলাম সহ আরো অনেকের।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জুড়ী উপজেলার বাছিরপুর এলাকায় জরিপ করতে গিয়ে কয়েকটি রোগের লক্ষণ পেয়েছে কৃষি অফিস। তার মধ্যে শীমের পাতার হলুদ রোগ বা মোজাইক রোগ, শীম ও বরবটিতে জাবপোকা বা ছাইপোকা, পঁচা রোগ বা মড়ক, লাউ, কুমড়া ও মিষ্টি লাউয়ে মাছি পোকার আক্রমণ।
শীমের পাতার হলুদ রোগ বা মোজাইক রোগ দমনে ইমিটাফ (ইমিডাক্লোরোপ্রিড গ্রুপের) জাতীয় কীটনাশক, শীম ও বরবটিতে জাবপোকা বা ছাইপোকা দমনে টাফগর কীটনাশক, পঁচা রোগ বা মড়ক দমনে রিডোমিল গোল্ড কীটনাশক, এবং লাউ, কুমড়া ও মিষ্টি লাউয়ে মাছি পোকা দমনে প্রতি ৫ শতাংশের জন্য সেক্স ফেরোমন ফাঁদ বা ফেরোমন ট্যাব ব্যবহার করলে এ রোগগুলো দমন সম্ভব বলে জানায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
জুড়ী উপজেলা কৃষি অফিসের উপ সহকারি কর্মকর্তা পংকজ কান্তি বিশ্বাস বলেন, আমরা বাছিরপুর এলাকায় রোগগুলোর প্রাদূর্ভাব পেয়েছি। এ নিয়ে কৃষকদের সাথে কথা বলে রোগ দমন করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। নিয়মিত কীটনাশক ব্যবহার করলে এ রোগ দমন করা সম্ভব।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, ভাইরাস জনিত মোজাইক রোগ শীমের মারাত্বক ক্ষতি করে। এ রোগ দমনে নিয়মিত কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। বাকী রোগগুলো দমনে পটাশ সার ব্যবহার করা যেতে পারে।