মোস্তাকিন মিয়াঃ মৌলভীবাজার শহরতলীর জগন্নাথপুরে বন্য শুকরের হানায় আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। ধান রক্ষা করতে এবং শুকরের আক্রমন ঠেকাতে রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছেন এলাকাবাসী। তার পরেও বন্য শুকরের হাত থেকে কিছুতেই রক্ষা করা যাচ্ছে না আমন ধানসহ নানা জাতের ফসলাদী। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতি রাতে বর্ষিজোড়া ইকো পার্ক সহ আশপাশের পাহাড় থেকে নেমে আসে শুকরের দল হানা দেয় ধান, সবজি সহ বাসাবাড়িতে। এমনকি ঘর-বাড়ির আশপাশের বিভিন্ন ফলজ গাছও রক্ষা পাচ্ছে না শুকরের আক্রমন থেকে। কষ্টের ধান রক্ষার্থে প্রত্যেক কৃষক নিজ জমিতে ভ্রাম্যমান তাবু তৈরী করে রাতে পাহারা দিচ্ছেন। এদিকে এবছর শীত মৌসুমে জগন্নাথপুরের কৃষকরা সবজি চাষাবাদ প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন বন্য শুকরের আক্রমনের ভয়ে। বিশেষ করে আলু, টমেটো, পুঁই শাক, লাল শাক কাঁচা মরিচসহ প্রায় একশত একর জমিতে চাষাবাদ হতো জগন্নাথপুর এলাকায়। কিন্তু বিগত বছর গুলোতে শুকরের আক্রমনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় এবছর চাষাবাদ ছেড়েই দিয়েছেন কৃষকরা। সরজমিনে দেখা যায়, যে জমিতে ধান পাকতে শুরু করেছে সেখানেই হানা দিচ্ছে শুকর। বন্য এ পশুর হাত থেকে কোন ভাবেই বাঁচানো যাচ্ছে না আধা পাকা ধান। কৃষক আনখার মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, জমিতে ধান পাকতে শুরু করেছে কিন্তু শুকরের হানার কারনে প্রতিদিন অনেক ধান নষ্ট হচ্ছে এবং আমার এক বিঘা জমির সব মুখি নষ্ট করেছে। এতে আমার প্রায় দশ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। তাই এ বছর সিদ্ধান্ত নিয়েছি সবজি চাষাবাদ করবো না। কৃষক ফরিদ মিয়া বলেন, যেভাবে আমরা ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছি আগামি বছর আর কৃষিক্ষেত করবো না বলে সিন্ধান্ত নিয়েছি। রুকিয়া বেগম বলেন, আমার পাচঁটি কলা গাছ উপড়ে ফেলেছে এই বন্য শুকর। এলাকাবাসী বলেন বারবার জেলা বন বিভাগকে জানালেও বন বিভাগ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। এবিষয়ে মৌলভবাজারের অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষন কর্মকর্তা আ.ন.ম. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বনে খাদ্য সংকট ও নিরাপদ বাসস্থানের অভাবে বন্যপ্রাণী লোকালয়ে চলে আসছে বলে আমরা ধারণা করছি। এর জন্য ফসলের ক্ষতি হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে এখন পর্যন্ত লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
বন্য শুকরের আক্রমনে নির্ঘুম রাত কাটছে জগন্নাথপুরবাসি, আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি!
