স্টাফ রিপোর্টারঃ ভারত সীমান্ত বেষ্টিত মৌলভীবাজার জেলা। এজেলার সবচেয়ে বড় নদী মনু ও ধলাই। দুইটি নদীর উৎপত্তিস্থ ভারত। ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে যে কোনো সময় প্লাবিত হতে পারে দুই নদীর তীরবর্তী এলাকা। এমন পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, এখন বৃষ্টির পুরো মৌসুম। বাংলাদেশ অংশে সৃষ্ট বৃষ্টিতে এ জেলায় তেমন পানি বাড়ে না। যেসব পানি মনু নদ দিয়ে প্রবল আকারে প্লাবাহিত হয় তার সবটুকু আসে ভারত থেকে। জানা গেছে, গত ৫ দিন পূর্বে মৌলভীবাজার সীমান্ত থেকে ৪৮ কিলোমিটিার পূর্বে “নলকাটা ব্যারেজ” দিয়ে বাংলাদেশে পানি বৃদ্ধি পেয়েছিল। তারা এ ব্যারেজ খুলে দেয়ায়ই একদিন জলমগ্ন থাকে মনু নদ। এসময় ধলাই নদী’র পানি বিপদসীমার ১৪৫ সেমি উপর দিয়ে এবং মনু নদী বিপদ সীমার ২০ সে.মি উপর দিয়ে প্রভাহিত হয়েছিল।
একটি সূত্র জানায়, ভারতের পানির সুষ্ট বন্টন নিয়ে আগামী ২২ জুন ভারতের সাথে বাংলাদেশের বৈঠক রয়েছে। এ বৈঠকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট উত্তর-পূর্বাঞ্চরের প্রধান প্রকৌশলী এ অঞ্চলের প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। এখানে পানির সুষ্ঠ বন্টন নিয়ে বিস্তর আলোচনা হবে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত দু-তিন দিনে পানি কিছুটা কমলেও এখনও আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পার করছেন নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা। পৌর শহরের অনেকেই মনু নদীর তীর থেকে বাসা পরবর্তীনের চেষ্টা করছেন। স্থানীয়রা বলছেন, দুটি নদী ড্রেজিং না করার কারনে ঠিক মতো পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। জানা যায়, মৌলভীবাজার ও কুলাউড়া অংশের মনু নদের ২৩ কিলোমিটার নাব্যতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ২৩ কোটি ৯০ লাখ ৪০ হাজার টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়াধীন বিআইডব্লিউটিএ। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাজ শুরু হয়ে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও তা শুরু হয়নি। পরিবেশবাদীরা মনে করছেন, কাজ না করিয়েই টাকা হাতিয়ে নিছে চক্রটি। তাই মেয়াদ শেষ হলেও এখনও কাজ শুরু করেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
এদিকে গেল বছর ঈদুল ফিতরের আগের রাত ভারি বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের মনু ও ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ১৩টি স্থান ভেঙে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এতে পায় শতাধিক গ্রাম তলিয়ে কয়েক’শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্ত্তী বলেন, আগামী অক্টোবর পর্যন্ত মৌলভীবাজারের মনু ও ধলাই নদ এলাকায় বন্যার আশংকা রয়েছে। তিনি বলেন, কেবল ভারত থেকে আসা ঢলে মনু নদে বন্যার সৃষ্টি হয়।