স্টাফ রিপোর্টার: মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার তারাচং গ্রামে হালিমা নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে জনমনে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্বামীর বাড়ির লোকজন মৃত্যুর ঘটনাকে আত্মহত্যা বললেও বাবার বাড়ির লোকজনের দাবি তাকে শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। এঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুল খালিক রাজনগর থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা করেছেন। পুলিশ নিহতের স্বামীকে গ্রেফতার করেছে। রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে এঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়নের তারাচং গ্রামের আব্দুন নূর মুহুরির ছেলে এনায়েতুর রহমান শাহিনের (৩৫) সাথে একই উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাজুয়া গ্রামের আব্দুল খালিকের মেয়ে হালিমা বেগমের (২৪) বিয়ে হয়। দম্পতির একটি ১৪ মাস বয়সী কন্যা সন্তান রয়েছে। রোববার সকালে পারিবারিক কলহের জেরে শাহিন তার স্ত্রীকে মারধর করেন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে হালিমা সিলিংয়ের সাথে গলায় কাপড় পেচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে শাহিনের পরিবারের লোকজন হালিমার পরিবারকে জানায়। তারা গিয়ে মৃতের গলায় কাপড়ের কাঁটা একটি অংশ ও অপর অংশ সিলিংয়ের সাথে আটকানো অবস্থায় দেখতে পান। এসময় মৃতদেহ বিছানায় রাখা ছিল। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। এদিকে হালিমাকে নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার অভিযোগ এনে ৩ জনের নাম উল্ল্যেখ করে অজ্ঞাত ২/৩ জনকে আসামী করে নিহতের বাবা থানায় মামলা করেছেন।
নিহতের শ্বশুর আব্দুন নূর বলেন, রোববার সকালে পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শাহিন স্ত্রী হালিমাকে চড় মারে। শাহিন তার স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা থাকলে আমাদের কোনো আপত্তি ছিল না। রাতে আমাদের পশ্চিমের ঘর থেকে সে বেরিয়ে স্ত্রীর কক্ষে গিয়ে দেখতে পায় হালিমা সিলিংয়ের সাথে কাপড় পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও পুলিশকে জানিয়েছি।
নিহতের বাবা আব্দুল খালিক বলেন, আমার মেয়েকে সকালে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন মারধর করেছে। আমি তাদেরকে বলেছি মেয়েকে আমার বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে। কিন্তু রাতে মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে তারা আমাদেরকে খবর দেয়। তাদের শারিরিক ও মানসিক নির্যাতনে এঘটনা ঘটেছে।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসিম বলেন, খবর পেয়ে আমরা মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। এঘটনায় নিহতের স্বামী শাহিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।