বড়লেখা প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পরিবহণ শ্রমিকদের ডাকা ৪৮ ঘন্টার ধর্মঘট চলাকালে উপজেলার চান্দগ্রামে অ্যাম্বুলেন্স আটকে সাতদিন বয়সি কন্যাশিশু মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার তিনদিন পর বুধবার (৩১ অক্টোবর) রাতে ওই শিশুর চাচা আকবর আলী বাদি হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলা নম্বর-১৮। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয়ে ১৬০ থেকে ১৭০জনকে আসামি করা হয়েছে।
বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইয়াছিনুল হক বৃহস্পতিবার (০১ নভেম্বর) বেলা ৩টায় এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘নিহত শিশুর চাচা আকবর আলী বাদি হয়ে মামলাটি করেছেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয়ে ১৬০ থেকে ১৭০জনকে আসামি করা হয়েছে। গোয়েন্দা ও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রকৃত আসামিকে শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানা গেছে, গত রোববার (২৮ অক্টোবর) বড়লেখা থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বড়লেখা উপজেলার বড়লেখা সদর ইউনিয়নের অজমির গ্রামের বাসিন্দা প্রবাসী কুটন মিয়ার সাতদিনের কন্যাশিশুকে নিয়ে যাওয়ার সময় পরিবহণ শ্রমিকরা চান্দগ্রামে প্রায় দেড় ঘন্টা অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখে। এতে চান্দগ্রামে অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই শিশুটি মারা গেছে।
ঘটনার পর নিহত শিশুটির চাচা আকবর আলী মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেছিলেন, ‘শিশুটিকে অসুস্থ অবস্থায় রবিবার সকালে আমরা শিশুটিকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে দ্রুত সিলেট নেওয়ার জন্য বলেন। চিকিৎসকের কথা মতো আমরা বাচ্চাটিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই।’
তিনি অভিযোগ করে বলেছিলেন, ‘সিলেট যাওয়ার পথে বড়লেখা উপজেলার দরগাবাজারে অ্যাম্বুলেন্সটি আটকে দেয় পরিবহণ শ্রমিকরা। কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দেয়। একইভাবে দাসেরবাজার এলকায় আটকানোর পর তাদের ছাড়া হয়। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে চান্দগ্রাম বাজারে আবারও শ্রমিকরা গাড়িটি আটকায়। এসময় অ্যাম্বুলেন্স চালককে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করা হয়। শিশুটি এখানেই একেবারেই নিস্তেজ হয়ে পড়ে। আমরা দ্রুত শিশুটিকে বিয়ানীবাজার হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
এ ঘটনার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সারাদেশে শুরু হয় তোলপাড়। ঝড় ওঠে নিন্দার। ঘটনার সঙ্গে জড়িত পরিবহণ শ্রমিকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন অনেকে। ঘটনার দুদিন পর গত মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) রাতে ওই শিশুর বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মা সঙ্গে কথা বলে পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ আইনগত সহায়তার আশ্বাস দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) আবু ইউছুফ।