বিশেষ প্রতিনিধিঃ
২০২১ সালের মহান বিজয় দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় রাষ্ট্রীয় নিয়ম মাফিক সম্মান প্রদর্শন না করা এবং ঘুষ গ্রহণ, অনিয়ম, দুর্নীতি ও সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী’র কাছে মৌলভীবাজারের রাজনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারী লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। রাজনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজান খাঁন, ভাইস চেয়ারম্যানদ্বয় সহ উপজেলার সকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দ ওই অভিযোগে স্বাক্ষর করেন।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করেননি। ওই থানায় যোগদানের পর থেকেই উপজেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে বাণিজ্য করে আসছেন। চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বড় অংকের টাকার বিনিময়ে একাধিক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন তিনি। যে কারো মামলা গ্রহণ করে উভয় পক্ষের কাছ থেকে টাকা আদায় করে আসছেন।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর দেয়া জনৈক মোহাম্মদ ফজলে কবির নামে এক ব্যক্তির আরো একটি অভিযোগে ওসি’র বিরোদ্ধে বিগত ৪র্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও সদস্যপ্রার্থীদের কাছ থেকে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তার আশ^াস দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা উল্লেখ করেন। তার এই অভিযোগের সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ওসি’র এসব কার্যক্রম নিয়ে তুমুল আলোচনা করা হয়। এসময় চেয়ারম্যানরা ওসিকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন।
টেংরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু খান জানান, ওসি সাহেবের স্বেচ্ছাচারিতা, ঘুষ বাণিজ্য সবাই জানে। আমার বাসায় হামলার ঘটনার মামলায় মূল আসামীদের গ্রেফতার না করে বাজারের ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে বানিজ্য করছেন। আমি বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উত্থাপন করায় তিনি দাম্ভিকতা প্রদর্শন করে বলেন আমার বিরুদ্ধে ১০টি মামলা নিবেন। নির্বাচনের সময় অনেক অভিযোগ পক্ষে বিপক্ষে হয়েছিল। এগুলো সমাধানও হয়ে গেছে। কিন্তু আমি শুনেছি নির্বাচনের ১৫দিন পর আমার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা নিয়েছেন। তার কাছে সাধারণ মানুষ জিম্মি।
উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নকুল চন্দ্র দাশ বলেন, সকল চেয়ারম্যান একত্রে উপস্থিত হয়ে অভিযোগে স্বাক্ষর করি। অভিযোগে উল্লেখিত ঘটনা সবই সত্য। ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম দীর্ঘ দিন যাবত সাধারণ মানুষকে নানা ভাবে হয়রানি করে আসছেন।
এ বিষয়ে জানতে রাজনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের অফিসিয়াল নম্বরে একাধিকবার কল করলে তিনি রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে তার ব্যক্তিগত নম্বরে কল দিলে তিনি কেটেদেন।