ষ্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার, নার্স ও অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মচারীরা সরকার নির্ধারিত সময়ে হাসপাতাল আসেন না। অনেকেই নিজেদের ইচ্ছা মাফিক হাসপাতালে যাওয়া-আসা করেন। উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চল থেকে সেবা নিতে আসা রোগীরা ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে ফেরত যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ জেলা সদরে চলে যান। এনিয়ে স্থানীয়রা একাধিকবার প্রতিবাদ করলেও আমলে নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী ২০, ১৫ কিংবা ১০ বছর যাবত একই কর্মস্থলে চাকুরি করছেন। এই সুযোগে তারা অনেকেই হাসপাতালে অধিপত্য বিস্তার করেছেন। সরকারি চাকুরির বিধিমালা মানছেন না কেউই। তাদের মধ্যে রয়েছে একটি সিন্ডিকেট। উপজেলার সাধারণ মানুষ হাসপাতাল স্টাফদের দায়িত্ব অবহেলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে হয়রানির স্বীকার হতে হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৫ সালে এক্সরে মেশিন হাসপাতালে বরাদ্দ দেয়ার পর দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত বক্স বন্ধি অবস্থা পড়ে আছে অদ্যবধি। মেশিনটি চালু করার জন্য কার্যকরি উদ্যোগ নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে হাসপাতাল প্রধান বলছেন একাধিকবার চেষ্টা করে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। তার চেষ্টা অব্যাহত আছে। এদিকে আরেকটি অত্যাধুনিক এক্সরে মেশিন আনার চেষ্টা রয়েছে তার। ১৬ বছরে পূর্বে দেয়া মেশিনটি চালাতে পারেননি তাহলে নতুন মেশিন কিভাবে চালাবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সচল রাখার চেষ্টা করব।
সরেজমিন রোববার সকালে হাসপাতাল গেলে দেখা যায়, মেডিকেল অফিসার ডাঃ প্রদীপ বিশ্বাস ১০টায়, ফেরদৌস আহমদ ৯.৫০ মিনিটে, সহকারী মেডিকেল অফিসার সুমিত্রা ৯.৪০ মিনিটে ও টিকেট কাউন্টারের রেবা বেগম ৯.৪০ মিনিটে হাসপাতালে আসেন। অথচ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাদের ডিউটি সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়। এ সময় দেখা যায়, হাসপাতালের ২টা এ্যাম্বুলেন্স নষ্ট অবস্থায় হাসপাতালের সামনে পড়ে আছে। এগুলো মেরামতেও কার্যকরি উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। ইউএইচও বলেন, চালক ১জন থাকায় সবকটি চালানো সম্ভব হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর উপহারেরটা সচল রয়েছে। গত ২৭ জুন অনুসন্ধান করে একই চিত্র পাওয়া যায়।
হাসপাতাল থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন ডাঃ বর্ণালী দাশ। টানা ৬ বছর তিনি একই কর্মস্থলে চাকুরি করছেন। এর আগেও তিনি ওই হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার, আরএমও ও ভারপ্রাপ্ত ইউএইচও হিসেবে একাধিক মেয়াদে কয়েক বছর দায়িত্ব পালন করেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৩ বছর পর বদলি হওয়ার কথা থাকলেও তার বেলায় ভিন্ন। অভিযোগ রয়েছে নানা তদবির করে তিনি এই হাসপাতালে রয়েছেন।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ বর্ণালী দাশ বলেন, কর্মকর্তারা দেরিতে আসেন এটি আপনাদের কাছ থেকে জেনে আরও সতর্ক হলাম। স্টাফদের নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত করতে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেয়া হবে।
সিভিল সার্জন ডাঃ চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ বলেন, তদারকি বাড়িয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।