স্টাফ রিপোর্টারঃ
গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণ ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগ কর্মী শিবলু দাস হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপি’র ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের ১ জনকে যাবজ্জীবন,৩ জনকে ১০ বছর এবং আরো ৩ জনকে ৭ বছরের দন্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সকাল ১১ টায় সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। এসময় আদালতে নিহত শিবলু দাসের মা-বাবা এবং তাদের পক্ষের বিপুল সংখ্যক আইনজীবি উপস্থিত ছিলেন। বিবাদী পক্ষে মামলার ১নং আসামী কামরুজ্জামান এবং তাদের পক্ষের আইনজীবিরা উপস্থিত ছিলেন ৷ মামলার বাকী আসামীরা পলাতক থাকায় তাদের অনুপস্থিতে রায় পড়ে শুনান বিচারক।
আদালত সূত্রমতে,যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে মামলার ১ নং আসামী,ঢাকাদক্ষিন সরকারী কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামানকে। ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ডপ্রাপ্ত ৩ জন হলেন,ঢাকা দক্ষিণ সরকারী কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জুনেদ আহমদ,কলেজ ছাত্রদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক তারেক আহমদ এবং উপজেলা ছাত্রদলের সহ সম্পাদক সুমন আহমদ। আদালত এ মামলায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন ৩ জনকে। তারা হলেন; উপজেলা ছাত্রদল কর্মী লাবলু হোসেন,দেলওয়ার এবং জহির উদ্দিন।
এদিকে ছেলের খুনীদের মৃত্যুদন্ড না হওয়ায় কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহত শিবলু দাসের মা-বাবা। তবুও তারা এ রায় মেনে নিয়েছেন৷ তারা পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করে সাজা কার্যকরের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন। বাদী পক্ষের আইনজীবি এডভোকেট মিসবাহ সিরাজ সাংবাদিকদের বলেন,আসামীদের মৃত্যুদন্ড হবে-এটা আমাদের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু,আদালত সবদিক বিবেচনায় খুনের সাথে জড়িত ৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন। এটা ন্যায় বিচারের দৃষ্টান্ত। এখন আমরা রাষ্ট্রের কাছে সকল আসামীকে গ্রেফতার করে সাজার মুখোমুখি করার দাবী জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য,২০১৩ সালের ১০ নভেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্টার দাবীতে দাকাদক্ষিন বাজারে সমাবেশ আহবান করেছিল ছাত্রদল। সে সমাবেশে ছাত্রলীগের হামলাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এসময় গুলিতে নিহত হন ছাত্রলীগ কর্মী শিবলু দাস। এ ঘটনায় ঢাকাদক্ষিন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃফয়জুল হক বাদী হয়ে ছাত্রদলের ১৫ জনকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার দিনই ১ নং আসামী কামরুজ্জামান এবং ২ নং আসামী জুনেদ আহমদকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ৬ মাস কারাবরণের পর জুনেদ জামিনে বের হয়ে পালিয়ে যায়। বারবার জামিন চাইলেও কামরুজ্জামানকে জামিন দেননি আদালত। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৫ সালে ৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে আজ আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।