ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় জুমা’র খুতবায় মূর্তি ও ভাস্কর্য নিয়ে আলোচনা রাখায় ইমামের উপর ক্ষেপে গেলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। ঘটনাটি নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ও মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ছাত্রলীগ নেতার এমন নেতিবাচক কান্ডে উপজেলা জোড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, গত শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) উপজেলার পশ্চিম বাছিরপুর জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মামুনুল হক জুমা’র খুতবায় মূর্তি ও ভাস্কর্য নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনার এক পর্যায়ে উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইকবাল ভূইয়া ইমামের আলোচনায় বাধা দেন। তখন ছাত্রলীগ নেতা বলেন, মূর্তি ও ভাস্কর্য এক নয় এবং ভাস্কর্য ও মূর্তি যে এক এ কথাটি বুঝিয়ে দিতে হবে।
পরে মসজিদের ইমাম ছাত্রলীগ নেতাকে বলেন, নামাজ শেষে বিষয়টি বুঝিয়ে দিবেন বলার সাথে সাথে ছাত্রলীগ নেতা উত্তেজিত হয়ে চিল্লাচিল্লি শুরু করেন। ছাত্রলীগ নেতার এমন আচরনে মুসল্লিরা উত্তেজিত হন। ইমাম সবাইকে শান্ত করে নামাজ আদায় করেন।
নামাজ শেষে বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ও মুসল্লিদের মধ্যে আবার কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এ ঘটনায় মুসল্লিদের একজন আহত হন। পরে ইকবাল ভূইয়ার ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ৫ জনকে আসামী করে জুড়ী থানায় একটি মামলা করেন।
মুসল্লিরা বলেন, মসজিদে আলোচনা চলাকালে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইমামকে নিয়ে অশালীন ভাষায় কথা বলেন। মুসল্লিগণ ছাত্রলীগ নেতার কথায় প্রতিবাদ করলে হাতাহাতি শুরু হয়।
মসজিদের ইমাম মাওলানা মামুনুল হক বলেন, জুমা’র আলোচনায় এমন কোন কথা বলিনি, যে কথার জেরে মারামারি হবে। তারপরও আমি বিষয়টি দু’পক্ষের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা করেছি।
তিনি আরও বলেন, ভাস্কর্য তৈরী করতে যে টাকা ব্যয় হবে তা গরীবের মধ্যে বিতরণ করলে তারা উপকৃত হবে। এমন কিছু কথাই বলেছি। এই কথা বলার পর ইকবাল ভূইয়া হৈ-হুল্লোড় শুরু করে। মসজিদের ভিতরে তার বাবা কাইয়ূম ভূইয়াও আমাকে অশালীন ভাষায় কথা বলেন।¬¬ শুনেছি আমাকে প্রধান আসামী ও আরও ৪ জনের বিরোদ্ধে মামলা করেছেন ইকবাল ভূইয়া।
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইকবাল ভূইয়া বলেন, ইমাম তার আলোচনায় বর্তমান সরকার গরীবের টাকা মেরে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি তৈরী করছেন। আমি এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছি। নামাজ শেষে এটা নিয়ে আমার কিছু ছোট ভাইদের (ছাত্রলীগ কর্মীদের) সাথে কিছু লোকের ঠেলাধাক্কা হয়।
জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, মসজিদে কি বলছে না বলছে এটা নিয়ে মারামারি হয়। এঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল ভূইয়া বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামী করে মামলা করেছেন।