ষ্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজারে পাকা আমন ধানের গন্ধে ভরে উঠছে আবহমান গ্রামীন জনপদ। সোনালি মাঠ এখন হেমন্তের পাকা ধানে ভরপুর। মাঠে মাঠে শুরু হয়েছে ধান কাটার উৎসব। কৃষক-কৃষাণীরা এখন ধান কাটা, বাড়িতে আনা, মাড়াই দেওয়া, মাড়াইকৃত ধান শুকিয়ে গোলায় তুলতে ব্যস্থ সময় পার করছেন। এ বছর জেলায় আমনের ফলন ভাল হয়ায় খুশি কৃষকরা।
করোনার কারণে জেলার অনেক ব্যবসায়ী ও চাকুরিজীবিরা শহর ছেড়ে পুরো আমন মৌসুম বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এই সুযোগে এবার অনেকে নিজের জমিতে আমন চাষাবাদ করেছেন। পরিচর্যা করায় অন্যান্য বছরের তুলনায় ফলনও হয়েছে অনেক ভালো।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় আমন ধান চাষাবাদে জমির পরিমানের লক্ষমাত্রা ছিল ১ লক্ষ ২’শ হেক্টর, আবাদ হয়ে ১ লক্ষ ১ হাজার ৪ শত ৮০ হেক্টর, উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লক্ষ ৬৪ হাজার ৮শত ২ মেট্রিকটন ধান। এর মধ্যে সদর উপজেলায় জমির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৯’শ ৭০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ১৮ হাজার ২’শ ৫ হেক্টর, উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার ৪ শত ৯২ মেট্রিকটন ধান। শ্রীমঙ্গলে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ৬’শ ৩০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ১৫ হাজার ৫’শ ৬৫ হেক্টর, উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৩ হাজার ৪৯ মেট্রিকটন ধান। রাজনগরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার ৬’শ ১৩ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ১’শ ৫ হেক্টর, লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৩ মেট্রিকটন ধান। কমলগঞ্জে জমির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৩শত হেক্টর, আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ২শত ৯৫ হেক্টর, লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৪ হাজার ৫ শত ৭৪ মেট্রিকটন ধান। কুলাউড়ায় জমির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ৯ শত ৭০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ২০ হাজার ১’শ ৯০ হেক্টর, উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার ৬ ’শ মেট্রিকটন ধান। বড়লেখায় জমির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৫ শত ৪০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ৬শত ৭০ হেক্টর, উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৩ হাজার ৩শত ৫ মেট্রিকটন ধান এবং জুড়ি উপজেলায় জমির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৪’শ ৪৭ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ৪শত ৫০ হেক্টর, লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৭’শ ৯১ মেট্রিকটন ধান।
রাজনগর উপজেলার মহলাল গ্রামের কৃষক আজাদ মিয়া বলেন, এবার সাত একর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। বাজারের সঠিক মূল্য পেলে ধানের ভর্তুকী দিতে হবেনা।
উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের ইসমাইল মিয়া, পশ্চিম ভাগ গ্রামের সামছুল মিয়া, জিল¬ুর রহমান সহ অনেকেই বলেন অন্য বছরের তুলনায় এ বছর আমন ধানের ফলন ভাল হয়েছে। আশা করি সঠিক বাজার মূল্য পেলে কিছু লাভবান হবো।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও সময় মতো বৃষ্টি হওয়ার করনে রোগ বালাই থেকে ফসল মুক্ত ছিল। তাই আমনের ফলন ভাল হয়েছে।