বিশেষ প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের বরুনা-হাজীপুর গ্রামের বাইক্কাবিল সড়কের প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাদের দাবি নি¤œমানের দ্রব্য সামগ্রী দিয়ে হালকা-পাতলা ঢালাই দিয়ে তড়িঘড়ি করে কাজ করা হচ্ছে। এ কাজে ওয়ার্ক অর্ডার মানা হচ্ছে না বললেই চলে। এতে জনবহুল এলাকার এ রাস্তাটি অল্প সময়েই নষ্ট হওয়ার আশংকা স্থানীয়দের।
জানা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলার বরুনা গ্রামের চৌমোহনা পয়েন্ট হতে হাজীপুর বাজার দিয়ে বাইক্কাবিল সড়কের ১ হাজার ৮’শ মিটার সড়কের সংস্কার কাজ পায় শ্রীমঙ্গলের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দেবাংশু এন্টারপ্রাইজ। কাজটি পাওয়ার পর ঠিকাদার এক্সাভেটর (মাটি কাটার মেশিন) দিয়ে খোড়ে বের হওয়া কংক্রিট দিয়ে রাস্তার মেকাডম করা হয়। তখন রাস্তার দুইপাশে সমানভাবে ইট না লাগিয়ে কিছু দূর পরপর ইটের গাঁথুনি দেয়া হয়। চলতি নভেম্বর মাসে কাজ শেষ করার কথা। গত অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে তড়িঘড়ি করে রাস্তা ঢালাইর কাজ শুরু হয়। এলজিইডি থেকে প্রাপ্ত ওয়ার্ক অর্ডারে এক ইঞ্চি পরিমান ঢালাই কাজ করার কথা থাকলেও তা সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না।
সরেজমিন দেখা যায়, কোন স্থানে হাফ ইঞ্চি আবার কোন স্থানে তার একটু কমবেশি করে কাজ হচ্ছে। রাস্তায় যে সকল ইট ব্যবহার করা হচ্ছে তা মাটির মতো। হাত দিয়ে চাপ দিলেই ভেঙ্গে যায়। এ নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এসময় উপস্থিত ১৫/২০ স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, কাজে কোনো গুণগত মান রক্ষা করা হচ্ছে না। সাব ঠিকাদার তার ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করছেন।
তাদের দাবি, এই রাস্তা দিয়ে শ্রীমঙ্গলের ঐতিহ্যবাহী বাইক্কাবিলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শত শত মানুষ প্রতিদিন আসা যাওয়া করেন। এছাড়া হাইল-হাওরে বহুল সংখ্যক মৎস খামার গড়ে উঠেছে। রাতদিন মাছ বহনকারী গাড়িসহ বরুনা-হাজীপুর গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। এই রাস্তাটির নির্মাণ কাজ ভালো না হলে সহজেই তা ভেঙে যাবে এতে সকলকেই ভোগান্তিতে পড়তে হবে।
এ ব্যাপারে বরুণা গ্রামের রশিদ আহমদ বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে খুব নি¤œমানের কাজ হচ্ছে। এক ইঞ্চি ঢালাইয়ের কথা থাকালেও কোন স্থানে হাফ ইঞ্চি আবার কোন স্থানে সোয়া ইঞ্চি কাজ করা হচ্ছে। এতে রাস্তাটি খুব অল্পদিনেই ভেঙে যাবে।
হাজীপুর গ্রামের সাইফুজ্জামান সেফু বলেন, ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী কাজ করার জন্য এলাকার মানুষ দাবি জানালেও তা আমলে নেওয়া হচ্ছে না। এতে এলাকার মানুষের মধ্যে অসন্তেুাষ বিরাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করেছি। ঠিকাদার জানিয়েছেন ‘সাব-কন্ট্রাকদারের মাধ্যমে এই কাজ করানো হচ্ছে। কাজ তো ঠিক মতো করার কথা।’ বিষয়টি তিনি এমনভাবে বলেন যে তার প্রতিষ্টানের কোন দায়ই নেই।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দেবাংশু এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্ত্বাধিকারি দেবাংশু মুঠোফোনে জানান, এলাকার লোকজন অভিযোগ করছে কিন্তু উপজেলা প্রকৌশল অফিসের লোকজন ঘটনাস্থলেই উপস্থিত থেকে তদারকি করছে। যদি কোন ত্রুটি পাওয়া যায় অবশ্যই আমি করে দিতে বাধ্য।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রকৌশলী সঞ্জয় মোহন সরকার মুঠোফোনে বলেন, অভিযোগের কথা শুনেছি। কিন্তু আমাদের লোকজন ঘটনাস্থলে আছে। তারপরও আমরা বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দিচ্ছি।