বিশেষ প্রতিনিধিঃ
মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর প্রয়াত আলহাজ্ব আজিজুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতা পুরুষ্কার গ্রহণ করেছেন উনার ভাই মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই পুরস্কারে ভূষিতদের হাতে পদক তুলে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
স্বাধীনতা পুরুষ্কার প্রাপ্ত আজিজুর রহমান করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চলতি বছরের ১৮ আগষ্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আজিজুর রহমান ছিলেন সাবেক গণপরিষদ সদস্য, সাবেক ২ বারের সংসদ সদস্য, সাবেক হুইপ, বাংলাদেশ সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগ এর সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সর্বশেষ মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি মৌলভীবাজার ইউনিট এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
প্রয়াত এ নেতা একজন সাংস্কৃতিক ও নাট্যকর্মী থেকে নিজের সততা, প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতায় হয়ে উঠেছিলেন দেশ-মাটি ও গণমানুষের নেতা। স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতিরজনক বঁঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট রাজনৈতিক সহচর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও ৪নং সেক্টরের মুক্তিযুদ্ধকালীন মৌলভীবাজার জেলা রাজনৈতিক সমন্বয়কারী ছিলেন।
আজিজুর রহমান ১৯৪৩ সালে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের গুজারাই গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক, ১৯৬২ সালে মৌলভীবাজার কলেজ থেকে আইকম এবং হবিগঞ্জের বৃন্দাবন কলেজ থেকে বি-কম পাশ করেন। এ মহান নেতা ১৯৭০ সালের নির্বাচনে গনপরিষদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে টানা ২ বার মৌলভীবাজার-৩ আসন থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় হুইপ ও একবার কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সম্পাদক নির্বাচিত হন। শুধু মুক্তিযোদ্ধা নয় তিনি একাধিক বার পাকবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন এবং পাক হানাদারদের হাতে নির্যাতনের শিকার হন। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, ১৪ দলের জেলা সমন্বয়কসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন আজিজুর রহমান। ছিলেন গণপরিষদ সদস্য এবং বাংলাদেশের সংবিধানে স্বাক্ষরকারী। তিনি ছিলেন সরাসরি বঙ্গবন্ধু প্রভাবিত রাজনীতিবীদ, এই অঞ্চলের অহিংস ও সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামাজিক বটবৃক্ষ।
সর্বশেষ তিনি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত করোনা মহামারিতে ত্রান বিতরণ, বন্যা, নদী ভাঙ্গনসহ নানা প্রাকৃতিক দুযোগে রাত দিন মানুষের সহায়তায় নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।