সরওয়ার আহমদ
মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনী প্রচারণা শুরু হলেও সাধারণ নির্বাচনের মতো নেই বহিরাঙ্গন জাকজমক। পোষ্টার ব্যানারের যেমনি নেই যত্রতত্র ছড়াছড়ি, তেমনি নেই মাইক্রোফোনের দাপাদাপি। তবে অন্ত:শীলা তৎপরতা চক্ষুস্মান না হলেও অনুভব যোগ্য হয়ে উঠেছে। তার সাথে যুক্ত হয়েছে অবারিত কৌতুহল এবং হার-জিত নিয়ে নানাবিধ গুঞ্জন। সাধারণ নির্বাচনের ক্ষেত্রে এলাকা চষে এবং সমীক্ষনের বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা সহ জয় পরাজয়ের আভাস মোটামুটি অনুমান করা সম্ভব। কিন্তু এ নির্বাচনতো সাধারণ ভোটারদের নির্বাচন নয়। ইলেক্টোরাল ইউনিটের ভোটে নির্বাচিত হবেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। অর্থাৎ ইউনিয়ন এবং পৌরসভার চেয়ারম্যান মেয়র সহ ওয়ার্ড মেম্বার ও কাউন্সিলর রাই হচ্ছেন ভোটদাতা এবং জয়পরাজয়ের নিয়ন্তা। স্থানীয় পরিষদের নির্বাচিত এ সমস্থ প্রতিনিধিরা ভোট দরিয়ার দক্ষ ডুবুরী। সমুদ্রসৈকতের ডুবুরিরা ডুব দিয়ে যেভাবে মুক্তা ঝিনুক কুড়ায় তেমনি স্থানীয় পরিষদের নির্বাচনে ডুব সাতার বা কৌশল অবলম্বন করে এ সমস্থ প্রতিনিধিরা ভোট আদায় করে নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমান ভোট মৌসুমে তাদের গতিবিধি বা ভোট প্রয়োগ সম্পর্কে ধারণা লাভে কৌতুহলীরা যেমন তেমন, পীরে কামেলরাও তাদের আধ্যাতিক ক্ষমতা বলে সঠিক পূর্বাভাস দিতে পারবেন না বলে মনে হয়না। এই ভোটের মাজেজা এমনই এক রহস্যঘেরা বিষয় বৈচিত্র। এ রহস্য আরও ঘনায়িত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে শাসকদল, বিরোধীদল, স্বতন্ত্র এবং বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠে খেলেছেন। এবার তার ব্যাতিক্রম। দলের মনোনয়ন নিয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে মিছবাউর রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে মাঠে নেমেছেন। অন্যদিক একই ঘরানার অপরপ্রার্থী এম.এ রহিম অস্তিত্বের স্বার্থে চ্যানেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। গ্রুপিং এর কারণে কোনঠাসা (তার মতে) এ প্রার্থীর পেছনে রয়েছেন জেলা ও থানা সম্মেলনকালীন অবমূল্যায়িত নেতাকর্মীরা। তলে তলে তারা ধেনুকভাঙ্গা সংকল্পে একাট্টা। এমতাবস্থায় আওয়ামী ঘরানার ভোট ব্যাংক বিভক্ত ধারায় প্রবাহিত হচ্ছেন বৈকি। এই বাস্তবতার আলোকে বিরোধী দল সমর্থক ভোটারদের ভোটের উপর নির্ভর করছে জয়পরাজয়। এমন ধারণা বোদ্ধা মহলের।
নির্বাচন অবাধ এবং নিরপেক্ষ হবে কিনা এ নিয়ে সংশয়ের তীর নিক্ষেপ হচ্ছে অবিরত। বিরোধী দলীয় বলয় থেকেই এ সংশয় শঙ্খা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সাধারণের মধ্যেও এটি ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা লক্ষণীয়। কিন্তু সীমিত সংখ্যক কেন্দ্র এবং নির্ধারিত পরিমাণের ভোটারদের ভোট প্রক্রিয়াতে কেন্দ্রদখল এবং অবাধে সীলমারার সংস্কৃতি প্রভাব ফেলতে পারবেনা বলেই ধারনা করা হচ্ছে। তাছাড়া একই নাটকের পূণর্মঞ্চায়ন সাধারণ হয়না- এই মহাজন বাক্যটুকু ও মনে রাখা দরকার। অত:পর নির্বাচনী বোলিং এবং ব্যাটিং কোন পর্য্যায়ে উপনীয় হয় দৃশ্যস্পটই তা বলে দেবে।