বিশেষ প্রতিবেদকঃ
গোটাদেশে যে নজির নেই, সেই নজির পাকাপোক্ত হচ্ছে মৌলভীবাজার শহরস্থ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ এবং চত্বরে। করোনা সংক্রান্ত বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে গত বছরের মতো এবারও মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে পূজা মন্ডপ তৈরী করে দূর্গা পূজার আয়োজনের প্রস্তুতিমূলক কার্য্যক্রম শুরু হয়েছে। স্থানীয় হরিজন যুব সংঘের ব্যানার এ পূজামন্ডপ তৈরীর নেপথ্যে রয়েছে বিতর্কিত এক হরিজন তরুন। তাকে ইন্ধন দিচ্ছেন প্রভাবশালী মহল। যে স্থানে পূজা মন্ডপ তৈরী করে দূর্গা পূজার আয়োজন করা হচ্ছে সেটি কোন দেবোত্তর সম্পত্তি বা আখড়া নয়। স্থানটি হচ্ছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের মালিকানাধীন পরিত্যক্ত সড়ক। যুদ্ধ বিধ্বস্থ মনুব্রীজের সংযোগ ছিলো এখানে। নতুন ব্রীজ স্থাপিত হওয়াতে সড়কটি পরিত্যক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধকালে মনুব্রীজে প্রদর্শনী হত্যাকান্ড এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন এলাকা থেকে নিরীহ মানুষকে ধরে এনে ব্রীজের উপর হত্যা করে নদীতে লাশ ফেলে দিতো হানাদার বাহিনী। সেই স্মৃতিকে অম্লান রাখার উদ্দেশ্যে এককালীন পৌর চেয়ারম্যান প্রয়াত মাহমুদুর রহমান এখানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ প্রকল্পটি অসমাপ্ত ছিলো। পরবর্তীতে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে এবং এল.জি.ই.ডির অর্থায়নে এখানে দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিসৌধ এ চত্বর তৈরী করা হয়। এই চত্বরেই হরিজন যুব সংঘ গত বৎসর পূজা অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিলে বিভিন্ন মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিষয়টি স্পর্শকাতর বিবেচনা করে জেলা প্রশাসন তখন নীরব ছিলো। কিন্তু এবারে চলমান করোনা বিধিনিষেধকে উপেক্ষা করে এখানে ঘটা করে পূজা আয়োজনের উদ্যোগের নেপথ্যে কোন রহস্য নিহিত? এ নিয়ে আলোচনা সমালোচনাকে ছাপিয়ে যে প্রশ্নটি উচ্চকিত হচ্ছে- সেটি হলো শহীদমীনার বা স্মৃতিসৌধে যদি ওয়াজ, মিলাদ, পূজা পার্বন বা অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান জাঁক জমকের সাথে পালিত হয়, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম আদর্শিক স্তম্ভ- ধর্ম নিরপেক্ষতাকে কি রসাতলে দেওয়া হলো?