ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
বাংলাদেশে ইতোমধ্যে করোনার প্রকোপ তীব্র আকার ধারণ করেছে। করোনাকালীন সময়ে কোনোরকমে কষ্টে জীবন যাপন করছে দেশের খেটে-খাওয়া দিনমজুর, অসহায় ও দুস্থরা।
যেখানে জীবন টিকিয়ে রাখতেই হিমশিম খাচ্ছে মানুষ, ঠিক সেই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের মাথায় বিদ্যুৎ বিলের বোঝা যেন মড়ার ওপর খঁড়ার ঘা।
মঙ্গলবার (১৯ মে) বিকেলে জুড়ীতে বিদ্যুৎ বিল দেয়ার জন্য মাইকিং করিয়েছে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। বিষয়টি নিয়ে জুড়ীতে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বুধবার (২০ মে) জুড়ী উপজেলার বাছিরপুর গ্রামের হাজী হেলাল উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পল্লীবিদ্যুৎ এর একদল লোক বিল গ্রহণ করছেন কোনো সামাজিক দূরত্ব ছাড়াই।
বাড়ির মালিক হাজী হেলাল উদ্দিন বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাড়িতে গ্রামের লোকজন জড়ো হয়েছেন বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার জন্য। আমার অনুমতি না নিয়ে বাড়িতে বিদ্যুৎ বিল নেওয়ায় আমি সেটি বন্ধ করে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, করোনার এই সময়ে আমি এলাকার কাউকে বাড়িতে আসতে দিচ্ছি না। আর তারা এতো লোক জড়ো করে বিদ্যুৎ বিল নিচ্ছে।
পরে ভিন্ন একটি স্থানে বিল নিতে চাইলে সামাজিক দূরত্ব না মানায় এলাকাবাসী সেটিও বন্ধ করে দেয়।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার পল্লীবিদ্যুৎ এর লাইনম্যান মহব্বত আলী বলেন, আমরা সব জায়গারই বিল গ্রহণ করছি। গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে আমরা বিল নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, বাড়ির কারো অনুমতি না পেলে তো আমরা আসতাম না। সরকারের নির্দেশনা থাকায় বিল নেওয়া হচ্ছে। নির্দেশনা না থাকলে তো বিল নেওয়া হতোনা।
এদিকে মাইকিং শুনে বিল দিতে আসা অনেকেই সংযোগ কেটে দেয়ার ভয়ে বিল দিতে এসেছেন বলে জানিয়েছেন। বিল দিতে আসা গ্রাহকরা মানছেন না কোনো সামাজিক দূরত্ব, ফলে থাকছে করোনার ঝুঁকি।
দেশে করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি বিবেচনায় ফেব্রুয়ারি-মার্চ-এপ্রিল-২০২০ মাসের বিদ্যুৎ বিলের বিলম্ব ফি (মাশুল) মওকুফ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল এবং করোনার সংক্রমণ থাকাকালীন সময়ে বিদ্যুৎ বিল জমা না নেয়ার জন্য ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকারের সিদ্ধান্তকে তোয়াক্কা না করে বিদ্যুৎ বিল জমা নিচ্ছে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার পল্লী বিদুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার জিয়াউর রহমান বলেন, আমরা বিল দেয়ার জন্য কাউকেই জোর করছি না, এবং বিল না দিলে কারো সংযোগ কাটা হবে না। ব্যাংক বিল না নেয়ার কারণে আমরা যথেষ্ট পরিমাণ সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে কোনোরকম বিলম্ব ফি ছাড়াই বুথ বসিয়ে বিল গ্রহণ করছি।
সরকারিভাবে চলমান এ সংকটে বিল গ্রহণ করতে নিষেধ ছিল, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরকম কোন নির্দেশনা নেই।