স্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার বিভিন্ন বাজার, পয়েন্টে, বাগান ও বাড়িতে প্রকাশ্যে মদ ও ইয়াবা বিক্রি চলছে। হাতের নাগালে মাদক দ্রব্য পাওয়ায় উপজেলার উঠতি বয়সী যুবকরা আসক্ত হয়ে পড়ছে। কিন্তু মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের কার্যকরি ভুমিকা না থাকায় ক্রমান্বয়ে এর মাত্রা বাড়ছে। এতে অতিষ্ট হয়ে উপজেলার তারাপাশা জালালীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা, তারাপাশা বাজার পরিচালনা কমিটি ও এলাকাবাাসী রোববার রাজনগ থানা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মৌখিকভাবে প্রশাসনকে অবগত করলেও কার্যকরি কোনো প্রদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, তারাপাশা বাজারের পশ্চিমে রুহিদাস পাড়ায় প্রতিদিন সন্ধার পর হতে রাত ১২/১টা পর্যন্ত শ্যামলাল রুহি দাসের ঘরে প্রকাশ্যে মদ খাওয়া হয়। শ্যামলাল রুহি দাস তার ঘরে মদ বিক্রয় ও খাওয়ার জন্য আলাদা ব্যবস্থাও করে রেখেছে। শ্যামলাল তার দুই স্ত্রীকে দিয়ে মদ বিতরণ করে। কিন্তু এখানে মদ বিক্রয় কিংবা খাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে কোনো লাইসেন্স দেয়া হয়নি। স্থানীয়দের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ক্ষমতাশীন দলের কিছু নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় সে দিদার চেয়ে একাজ চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ শ্যামলালোর ঘরের পাশেই তারাপাশা জালালীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও তারাপাশা বাজার জামে মসজিদ। হাফিজিয়া মাদ্রাসায় প্রায় ৪৫/৫০ জন শিক্ষার্থী আবাসিক থেকে পবিত্র কুরআন শরীফ হিফজ করছে। পাশেই তারাপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বাজারের মধ্যখানে তারাপাশা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের অবস্থান। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৩’শ শিক্ষার্থী এবং কলেজ প্রায় ২’শ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। কিন্তু তার পরেও শ্যামলালকে মদ বিক্রি থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না।
সরেজমিন বাজারের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, মৌখিক ও লিখিত ভাবে একাধিকবার অভিযোগ দেয়ার পরেও প্রশাসন কোনো প্রদক্ষেপ নেয়নি। তারা বলছেন, প্রশাসন ও ক্ষমতাশীন দলের নেতাকর্মীরা এখান থেকে সুবিধা নিচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলেন, মদ বিক্রি ছাড়াও বাজারে রাতে ভ্রাম্যমান ইয়াবা বিক্রি হয়।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এছাড়াও উপজেলার কাশিমপুর পাম্প হাউজের পার্শ্ববর্তী এলাকা, ইসলামপুর বাজার, উত্তর ঘরগাঁও, বীসাইর দোকান পার্শ্ববর্তী এলাকা, মুন্সিবাজার, টেংরাবাজার, খেয়াঘাট, মোকামবাজার আজিদ মিয়া’র বাড়ি, পাচগাঁও ইউনিয়নের চকিরাই গ্রাম, মনসুরনগর ইউনিয়নের বানারাই। অভিযোগ রয়েছে একজন ইউপি সদস্যের ছত্রছায়ায় মনসুরনগর ইউনিয়নে ইয়াবা কেনাবেচা হয়।
এদিকে উপজেলার বিভিন্ন বাগানে খোলামেলা মদ বিক্রি চলছে। শুধুমাত্র চা শ্রমিকদের মধ্যে মদ বিক্রি বিধান থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা উঠতি বয়সী যুবকরা সাইকেলে এসে নিরাপদে বাগানে বসে খেয়ে যেতে পারছে।
এবিষয়ে রাজনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসেম বলেন, মাদক তো সার দেশে ছড়িয়ে আছে। কিন্তু তথ্য না পেলে কিভাবে অভিযান চালাবো। তাহলে তথ্যটা আপনাদেরকে কে দেবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আমাদেরকেই সংগ্রহ করতে হবে এবং দেশ ও এলাকার স্বার্থে সচেতন মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
এবিষয়ে জানতে মৌলভীবাজার মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে গেলে উপ-পরিচালক আব্দুল মজিদকে পাওয়া যায়নি। উনি কোথায় জানতে চাইলে কর্মচারীরা বলেন, “স্যার ঢাকা মিটিংয়ে”।
রাজনগরে প্রকাশ্যে মদ ও ইয়াবা বিক্রি
