স্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ চা-বাগানে শ্রমিকদের দু’পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় উভয়পক্ষে ৭জন শ্রমিক আহত হয়েছে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। শুক্রবার সকালে এঘটনা ঘটে। এঘটনার পর থেকে বাগানে উভয় পক্ষের শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এসময় সাংবাদিকরা ঘটনার ছবি তুলতে গেলে কামাল হোসেন নামের ফ্যাক্টরীতে কর্মরত একজন লোক তাদেরকে বাঁধা দেয়।
জানা যায়, উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের উত্তরভাগ চা-বাগানের চৌকিদার অমৃতলাল পাশীর সাথে দুইমাস আগে ফ্যাক্টরী ম্যানেজার সাইদুর রহমানের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে অমৃতলাল পাশী ম্যানেজারকে শারিরিকভাবে লাঞ্চিত করেন। পরে বাগানের পঞ্চায়েত নেতারা মামলা না করতে অনুরোধ করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দিবেন বলে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন। কিন্তু ওই শ্রমিককে কাজ থেকে অব্যাহতি দিয়ে বাগান ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে নোটিশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
পঞ্চায়েত কমিটি ও শ্রমিকরা যে কোনো দাবী তুললেই কর্তৃপক্ষ তাদেরকে (অপর পক্ষের শ্রমিকদের) দিয়ে তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ তাদের। এসব ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতির পক্ষের শ্রমিকরা। তারা মানবিক বিবেচনায় বাগানের অব্যাহতি পাওয়া শ্রমিক অমৃতলাল পাশীর পরিবারের অন্য কোনো সদস্যকে কাজ দেওয়া, মন্দিরের কাজ দ্রুত শেষ করা, বাগান শ্রমিকদের লেখাপড়া জানা সন্তানদের চাকুরী দেওয়া, পুকুরের মাছ ধরার ঘটনার আপোষ-মিমাংসার মাধ্যমে নিষ্পত্তি ও অফিসে কাজ করা অপরপক্ষের শ্রমিকদের মাঠের কাজে নিযুক্ত করার দাবী জানিয়ে শুক্রবার (১৯ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে শ্রমিক ধর্মঘট শুরু করে।
এঘটনায় আহতরা হলেন, রিতা কর্মকার (৪৫), সুনীল কর্মকার (৪০), রুনা নাইডু (৩৫), লক্ষীলাল পাশী (৩৫), রুসনা বেগম (৪০), হেমন্তী দাস (৪০), কুসুম বাগতি (৪০) শ্রীমতি বাগতি (৪০)। তাদেরকে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি দুলাল বাগতি বলেন, বাগানের সাধারণ শ্রমিকরা কোনো ন্যায্য দাবী তুললেই কর্তৃপক্ষের সুযোগ-সুবিধা ভোগকারী একটি পক্ষ শ্রমিকদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়। এছাড়া শ্রমিকদের কথা না ভেবে তারা মালিকদের পক্ষ নেয়। এতে সাধারণ শ্রমিকরা তাদের উপর ক্ষুব্ধ রয়েছে।
এব্যাপারে বাগান ম্যানেজার জয়নাল আবেদীনের কাছে সাংবাদিকরা এই ঘটনার কারন এবং পুরো বিষয়ের উপর বক্তব্য চাইলে তিনি বলেন, নো কমেন্টস। আমি এই বিষয় নিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসিম বলেন, উত্তরভাগ চা-বাগানে দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের দু’পক্ষে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝামেলা চলছে। মারামারির ঘটনায় উভয়পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
রাজনগরে চা শ্রমিকদের দু’পক্ষে সংঘর্ষ, আহত-৭
