স্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ব্যাংক শব্দ ব্যবহার করছে “আজিজ কো-অপারেটিভ” নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকের কথা বলে এলাকার সরলমনা গ্রাহকের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার আমানত সংগ্রহ করছে প্রতিষ্ঠানটি। এলাকার বেকার যুবকদের চাকুরি দেয়ার কথা বলেও প্রতিজনের কাছ থেকে ৩/৫ লক্ষ টাকার জামানত সংগ্রহের অভিযোগ উঠেছে সোসাইটির বিরুদ্ধে। প্রথমে মৌলভীবাজারবাসী বিষয়টি বুঝতে না পারলেও এখন তাদের প্রতারণা ফাঁদ বুঝতে পারছেন। বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কোনো শাখা না করে গ্রামগঞ্জে শাখা করায় নানা প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে গ্রাহকদের মাঝে। গ্রাহকরা মনে করছেন এটা সহজে টাকা আত্মসাৎ করার একটা কৌশল মাত্র।
জানা যায়, আজিজ কো-অপারেটিভ ২০ মার্চ জেলার রাজনগর উপজেলার টেংরাবাজারে কার্যক্রম শুরু করে। এদিকে কুলাউড়া উপজেলার রবিরবাজারে অফিস প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে কিন্তু এখনও কার্যক্রম শুরু হয়নি। ইতি মধ্যে ৩বার ওই অফিস উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করেও হয়নি। তবে ওই শাখার চাকুরি প্রত্যাশি কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন এটা শুধু সাইনবোর্ড সর্বস্থ কার্যক্রম। সূত্র জানায়, অবৈধ ব্যাংকিংয়ের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ইতি মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সতর্কতা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এদিকে বেআইনিভাবে ব্যাংক ব্যবসা করে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৩শ’ কোটি টাকা আত্মসাদের অভিযোগে রাজধানীর বংশাল থানায় করা অর্থ আত্মসাৎ ও প্রাণনাশের হুমকির এক মামলায় বৃহস্পতিবার পুলিশ সোসাইটির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। এরপর ২ দিনের রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ইতি মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম কানাডায় অবস্থানরত তার দুই ছেলের কাছে শত কোটি টাকা পাচার করেছেন। অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
নাম গোপন রাখার শর্তে মৌলভীবাজারের একাধিক চাকুরি প্রত্যাশি বেকার যুবক বলেন, আজিজ কো-অপারেটিভে চাকুরী দেয়া হবে বলে জেলার ১৫/২০ জন যুবকের কাছ থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার জামানত সংগ্রহ করেছেন সোসাইটির সিলেট বিভাগীয় ডিজিএম ফারুক আলম তালুকদার। চাকুরীর জন্য আজিজ কো-অপারেটিভের কাছে টাকা জমাকারী কয়েকজন যুবক বলেন, চাকুরীর জন্য অনেকে ৩/৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানত দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত চাকুরি দেয়া হয়নি। আবার জামানতকৃত টাকা তুলতে চাইলে বলা হয় ১১ শতাংশ কেটে রাখা হবে। তাছাড়া চাকুরিতে যোগদানের পর প্রতি মাসে ৩/৫ লাখ টাকা আমানত দিলে মাসিক বেতন হবে ১০/১১ হাজার টাকা। হেড অফিস নাম ব্যবহার করে হবিগঞ্জের বাসিন্দা সিলেট বিভাগীয় ডিজিএম ফারুক আলম তালুকদার নামের এক ব্যক্তি মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাংকের শাখা খোলা হবে বলে চাকুরি প্রত্যাশিদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
সিলেট বিভাগীয় ডিজিএম ফারুক আলম তালুকদার বলেন, এটা তো অর্থ সংশ্লিষ্টা প্রতিষ্ঠান। যার কারণে ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জামানত হিসাবে কিছু টাকা রাখা হচ্ছে। আবার প্রতি মাসে ওই টাকার লভ্যাংশ তাদের দেয়া হচ্ছে। টাকা নিয়ে চাকুরি দেয়া হয়নি এমন অভিযোগ তিনি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।
মৌলভীবাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা লঙ্গন করে প্রতারণা
