স্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজারে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের বৈষম্য ও অনিয়ম-দূর্ণীতির প্রতিবাদে জেলা নার্সারী মালিক সমিতির মৌণ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ ২৮ মে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায়। জেলা নার্সারী মালিক সমিতির সভাপতি আতাউর রহমান মেন্দির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুকান্ত দাস মধুর পরিচালনায় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব চত্বরে অনুষ্ঠিত এ মৌণ মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়- মৌলভীবাজার জেলার নার্সারী মালিকরা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। জেলায় অনেক নার্সারী থাকা সত্তেও, কৃষকদেরকে বৃক্ষরোপনে উৎসাহিত করার জন্য জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও উপজেলা থেকে কৃষকদের মধ্যে যেসব বৃক্ষচারা বিতরণ করা হয় তা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রয় করে স্থানীয় নার্সারী মালিকদেরকে বৃক্ষচারা বিক্রি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
জেলার নার্সারী মালিকদের নার্সারী স্থাপনের মতো নিজস্ব ভূমি না থাকায় অন্যের ভূমি ভাড়া নিয়ে নার্সারী স্থাপন করেন। ওইসব ভূমিমালিকরা যখন ভূমি বিক্রি করে দেন অথবা দালান নির্মান করেন, তখন নার্সারী স্থানান্তরের মতো ভূমি ব্যবস্থা করতে না পেরে চরম সমস্যাগ্রস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অনেকে নার্সারী গুটিয়ে নিতে বাধ্য হন। এ ধরনের সমস্যায় প্রায় ১০ জন নার্সারী মালিক বেকার অবস্থায় অসহায় ও মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের আশায় নার্সারী মালিকদেরকে খাস ভূমি বরাদ্দের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর বেশ কয়েকবার মৌখিক এবং ২০১৬ সালে লিখিত আবেদন করা হলেও অদ্যাবধি কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
বিগত ২০১৮ সালের বন্যায় বেশ কয়েকটি নার্সারী ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেসময় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের মধ্যে পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণ ও অনেককে পুণর্বাসন করা হলেও, ক্ষতিগ্রস্ত নার্সারী মালিকদেরকে পুণর্বাসন তো দূরের কথা কোন ত্রাণ পর্যন্ত প্রদান করা হয়নি। পরবর্তীতে একজন নার্সারী মালিক সরকারী সহায়তা চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেও কোন সহায়তা পাননি।
কৃষকদের মধ্যে কলমের চারা বিতরণ করার সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী কলমের চারা ক্রয়ের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়। কিন্তু, জেলায় অনেক নার্সারী থাকা সত্তেও কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সিন্ডিকেট করে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কলমের চারার পরিবর্তে বীজের চারা ক্রয় করে তা কলমের চারা হিসাবে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করে থাকে।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বিভিন্ন কর্মসূচী ও কর্মশালায় অংশগ্রহণ থেকে এবং সরকারী বিভিন্ন অনুদানসহ সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থেকে জেলার নার্সারী মালিকদেরকে বঞ্চিত করে আসছে। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের অনুরুপ স্থানীয় বন বিভাগও জেলার নার্সারী মালিকদের সাথে অনুরুপ বৈষম্যমূলক আচরণ করে আসছে।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের এসব বৈষম্য ও অনিয়ম-দূর্ণীতির প্রতিবাদে তারা রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছেন উল্লেখ করে আজকের মৌণ মানববন্ধনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তারা (১) নার্সারী মালিক ও শ্রমিকদের প্রতি কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের বৈষম্য বন্ধ করার (২) কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক কৃষকদেরকে বীজের চারা প্রদান বন্ধ করে কলমের চারা প্রদান করার (৩) সিন্ডিকেট করে সরকারী টাকায় জেলার বাইরে থেকে চারা ক্রয় বিক্রয় বন্ধ করার (৪) কৃষকদের মধ্যে বিতরনের জন্য কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর কর্তৃক স্থানীয় নার্সারীর চারা ক্রয় করার (৬) বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত নার্সারীর মালিকদেরকে সরকারী সহায়তা ও অনুদান প্রদানের এবং (৭) নার্সারী মালিকদেরকে নার্সারীর জন্য খাস ভূমি বরাদ্দ দেয়ার দাবী জানান।
বৈষম্য-অনিয়ম-দূর্ণীতির প্রতিবাদে জেলা নার্সারী মালিক সমিতির মৌণ মানববন্ধন
