ষ্টাফ রিপোর্টার
মৌলভীবাজারে শুরু হওয়া ৭দিন ব্যাপি এসএমই মেলায় চরম অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত লোকসান গুণছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। অনেকেই এখন স্টল গুটিয়ে নিজ এলাকায় চলে যাচ্ছেন। আয়োজকদের কাছে একাধিকবার অভিযোগ দিলেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হচ্ছেনা বলে ভোক্তভোগীদের অভিযোগ।
জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন, এসএমই ফাউন্ডেশন, নাসিব, চেম্বার অব কমার্স ও বাংলাদেশ ব্যাংক এর যৌথ উদ্যোগে গত ২৮ মার্চ থেকে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৭ দিন ব্যাপি আঞ্চলিক এসএমই পণ্য মেলা শুরু হয়। মেলার ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারি তরফ থেকে ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
সরেজমিন সোমবার দুপুরে মেলায় গেলে ময়মনসিংহ থেকে আসা ফাতেমা নকশি বাড়ি’র প্রোপাইটার ফাতেমা জুহরা বলেন, বিকাল ৩টা পর্যন্ত মাত্র ১হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। দিন শেষে মালামাল বিক্রির টাকা দিয়ে হোটেলে থাকা ও খাওয়ার খরচ জোগাড় করা অনেকটা কষ্ট হচ্ছে। যার কারনে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে। ফাতেমা আরোও বলেন, মেলায় মহিলা ব্যবসায়ীদের জন্য আলাদা স্যানিটেশনের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। অন্য জায়গায় গিয়ে টয়লেটসহ প্রাকৃতিক কাজ সারতে হচ্ছে। স্টলের উপরে টিন নেই। বৃষ্টি দিলেই পানিতে মালামাল নষ্ট হয়। দিনে রোধে শুকিয়ে বিক্রি করতে হয়। প্রচারণা নেই বললেই চলে। তিনি আরোও বলেন, রোববার মাঠের পাশের একটি ফার্মেসীতে ঔষধ কিনতে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে জানতে পারলাম তারাও মেলার খবর জানেনা। এসময় প্রতিবেদক সুমাইয়া এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটার জহিরুল হকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বেচাকেনা মোটেই হচ্ছেনা। একই অভিযোগ করেন, সিয়াম হস্তশিল্পের প্রোপ্রাইটর মোঃ আল-আমিন, পুতুল হ্যান্ডিক্রাফটের প্রোপ্রাইটার রুবিনা বেগম, লীলাবতী হ্যান্ডিক্রাফটের প্রোপ্রাইটর মাহমুদুল হাসান ও ওয়াফ এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর শাকি বেগম সহ অনেকেই ।
একটি সূত্র জানায়, কোটেশনের মাধ্যমে ১ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা দিয়ে মেলার প্যান্ডেল ও স্টলের ডেকোরেশনের কাজ দেয়া হয়। বরাদ্দকৃত ১০ লক্ষ টাকার মধ্যে বাকী ৮ লক্ষ ৬ হাজার টাকা প্রচারণাসহ অন্যান্য খাতের জন্য রাখা হয়। কিন্তু বাস্তবে কতটুকু ব্যয় হয়েছে এমন প্রশ্ন বিরাজ করছে মেলায় অংশ গ্রহণকারী ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে স্থানীয় সচেতন মহলের মধ্যে।
রোববার ৩১ মার্চ শহরে মাইক দিয়ে এসএমই মেলার প্রচারণা করতে শুনা যায় “আগামী ২৮ মার্চ মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এসএমই পণ্য মেলা শুরু হবে”। অথচ মেলা শুরু হয়ে ৪দিন অতিক্রম করছে। এমন তথ্যগত ভুলের কারনে বিভ্রান্তিতে পড়েন শহরের মানুষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আয়োজককারী একটি প্রতিষ্ঠানের এক সদস্য বলেন, বরাদ্দকৃত ১০ লক্ষ টাকার মধ্যে ২ লক্ষ টাকার ব্যয় দৃশ্যমান। বাকী ৮ লক্ষ টাকার ব্যয় সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই।
নাসিবের জেলা সভাপতি বকশি ইকবাল আহমদ বলেন, “বাথরুম না থাকায় আমিও কয়েকজন মহিলাকে প্রাকৃতিক কাজ সারার জন্য ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তবে বাথরুমের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এবিষয়ে জানতে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ অতিকুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ব্যবসায়ীদের অভিযোগের কথা বললে তিনি বলেন, “আমি একটু ঝামেলায় আছি পরে ফোন দিন”।
মৌলভীবাজার এসএমই মেলায় অব্যবস্থাপনার অভিযোগ
