কুলাউড়া প্রতিনিধি:
দ্বিতীয় দফায় অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষেদ নির্বাচন নিয়ে ভোটাররা চরম হতাশ। কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের সৈয়দ ময়েজ উদ্দিন আকল (৬৫), জয়চন্ডী ইউনিয়নের রঙ্গীরকুল গ্রামের বাসিন্দা মির্জান খাঁ (৬৭), কামারকান্দি গ্রামের চান্দ আলী (৭০), কর্মধা ইউনিয়নের ফটিগুলির বাসিন্দা সুনাই মিয়া (৬৮) ভোট দিতে এসে জানান, বাবারে ইলা (এরকম) ভোট আমরার জীবনেও দেখছি না। ভোটাররা ভোট কেন্দ্রেই আসেনি। বিশৃঙ্খলার কোন সুযোগ নেই।
একই চিত্র কুলাউড়ার চা বাগান অধ্যূষিত জয়চন্ডী ইউনিয়নের দিলদারপুর উচ্চ বিদ্যালয়, দিলদারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কামারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কর্মধা ইউনিয়নের নলডরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে। সরেজমিন পরিদর্শণে গেলে ভোটারদের উপস্থিতি গত সংসদ নির্বাচনের তুলনায় অর্ধেক চোখে পড়ে। চা-বাগানে ভোটার উপস্থিতি কমের কারণ জানাতে গিয়ে মেরিনা চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি খোকা নায়েক ও সাধারণ সম্পাদক করিম মিয়া জানান, এমপি ভোটের চেয়ে অর্ধেক ভোটার উপজেলা নির্বাচনে ভোট দিতে এসেছে। কারণ বিগত এমপি ভোটে চা শ্রমিকরা ভোট দিয়েছে। এবার ভোট নিয়ে শ্রমিকরা বেশি আগ্রহী নয়।
শুধু ভোটারই নয়, অনেক প্রার্থীরা নিজ গ্রামের ভোটারদের নিতে পারেননি কেন্দ্রে। উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের কর্মধা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের ২নং বুথের অধীনে ভাতাইয়া গ্রাম। সেই গ্রামের মেয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ফাতেহা ফেরদৌসী চৌধুরী। অথচ সকাল ১০টা পর্যন্ত এই বুথে ভোট পড়ে মাত্র একটি। বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ১১টি।
কর্মধা ইউনিয়নের নলডরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মশিউর রহমান জানান, কেন্দ্রের মোট ভোটর সংখ্যা ৩১১৫। অথচ বেলা ১২টা পর্যন্ত মাত্র ৪শত ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। জয়চন্ডী ইউনিয়নের কামারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রিসাইডিং অফিসার রাজিকুল হাসান জানান, এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩হাজার ৪৩২। সকাল ১০টা পর্যন্ত ৯টি বুথে সর্বোচ্চ দেড়শ ভোট পড়েছে। রাউৎগাঁ ইউনিয়নের নর্তন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার সঞ্জিত কুমার দাস জানান, মোট ২৫০৫ ভোটের মধ্যে সকাল ১১টা পর্যন্ত ৭টি বুথে আনুমানিক ২শ ভোট গ্রহণ করা হয়েছে।
একই চিত্র কুলাউড়া শহরের ভোট কেন্দ্রগুলোতেও। কুলাউড়া নবীন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার নুরুল মাহমুদ ভুইয়া জানান, শহরের জনগুরুত্বপূর্ণ এ কেন্দ্রে মোট ৩হাজার ২১৩ ভোট। দুপুর ২টা পর্যন্ত ৯টি বুথে মোট ৭শ ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে সকাল ১০টার আগেই উপজেলার সবক’টি ভোট কেন্দ্র ফাঁকা পরিলক্ষিত হয়। বিচ্ছিন্নভাবে দু’একজন ভোটার এসে ভোট দিতে দেখা যায়।