ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
মৌলভীবাজার জেলার ৭টি উপজেলায় রাত পোহালেই দ্বিতীয় দাফে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ছিল প্রচারণার শেষ সময়। তাই শেষ সময়ে ভোটরদের মন জয় করতে দ্বারে দ্বারে গুরছেন প্রার্থীরা। তবে বিএনপি বা অন্যদলের হেভিওয়েট প্রার্থী না থাকায় জেলার সব উপজেলায়ই ভোটের আমেজ তেমনটা জমে উঠেনি।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নির্বাচনের হাওয়া যেন একেবারেই নীরব। এই উপজেলায় আ.লীগ মনোনিত প্রার্থী মো. কামাল হোসেন চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাই নির্বাচন নিয়ে ভোটরদের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় ভাইস-চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন হাফিজ আলাউর রহমান টিপু (চশমা) ও সাবেক ভিপি আব্দুল মতিন (বাল্ব)। মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন শাহীন রহমান (পদœাফুল), মিতা ভূইয়া (ফুটবল), মিলি আছিয়া রহমান (প্রজাপতি), রাশিদা খান (কলস)। রাজনগর উপজেলায় নৌকা প্রতীক দেয়া হলেও দলের আরো ৩ প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতীক নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তারা হলেন- আ.লীগের আছকির খান, বিদ্রোহী প্রার্থী মিছবাহুদ্দোজা (ভেলাই) সাতির মিয়া, শাহজান খান। রয়েছেন স্বতন্ত্রী প্রার্থী এডভোকেট আব্দুল মতিন চৌধুরী। কুলাউড়া উপজেলায় নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আ.স.ম কামরুল ইসলাম। এ উপজেলায় আ.লীগের বিদ্রোহী একে এম শফি আহমদ সলমান ছাড়াও নবাব আলী নকি খান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কমলগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যাপক রফিকুর রহমান (নৌকা), আ.লীগের (বিদ্রোহী) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন স্থানীয় সংসদ আব্দুস শহীদের ছোট ভাই ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুল ও ওয়ার্কার্স পার্টির আব্দুল আহাদ মিনার (হাতুড়ি)। জুড়ী উপজেলায় আ.লীগ সমর্থিত গুলশান আরা মিলি, আ’লীগের বিদ্রোগী প্রার্থী এম এ মুহিত ফারুক ও কিশোর রায় চৌধুরী মনি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। বড়লেখায় চেয়ারম্যান পদে আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী রফিকুল ইসলাম সুন্দর (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন (মোটরসাইকেল) এবং ইউপি চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ (ঘোড়া) প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। শ্রীমঙ্গল উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে রনধীর কুমার দেব (নৌকা), আ.লীগের বিদ্রোহী আফজল হক (স্বতন্ত্র) ও আব্দুল কাইয়ুম প্রচারনা চালাচ্ছেন।
এই জেলার ৭টি উপজেলার ৫টি পৌরসভা ও ৬৭টি ইউনিয়নে মোট ১০ লক্ষ ৬২ হাজার ৯১১ জন ভোটার রয়েছেন। মোট ভোট কেন্দ্র ৫১৯ি টি।
প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রতীক পাওয়ার পরই শুরু করেন প্রচারণা। ডিজিটাল প্রচারণার পাশাপাশি শেষ মুহূর্তে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় তৈরি হয়েছে ভোট উৎসব। ভোর রাত থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগের পাশাপাশি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে ছুটছেন। ভোটারদের মন জয় করতে বাদ যাচ্ছে না কোনো কৌশলই। কিন্তু তারপরও কাজ হচ্ছে না। কিছুতে ভোটের আমেজ ছড়াচ্ছে না। শেষ সময়েও তা দেখা যাচ্ছে না। প্রার্থীরা সরব হলেও ঘুমন্ত ভোটার। ভোটাররা যেন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এমন নীরবতায় এ জেলার রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সচেতন ভোটাররা মনে করছেন এমন মনোভাব গণতন্ত্র ও রাজনীতির জন্য অশনি সংকেত।
তবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করার জন্য হুশিয়ারী দিয়েছেন মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল। তিনি নুন্যতম অন্যায় ও কারচুপিকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান।