কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:
প্রতিপক্ষের দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় আদালতে জামিন নিতে গেলে পুলিশি উপস্থিতিতে ভূমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন এক মহিলা।
বুধবার (২৩ জানুয়ারী)দুপুরে কমলগঞ্জ সাংবাদিক সমিতি ইউনিট কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভূমি দখল ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ করেন শমশেরনগর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর (রাধানগর) গ্রামের প্রয়াত সজ্জাদ মিয়ার স্ত্রী মোছা. শামসুন্নাহারসহ অন্যান্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রঘুনাথপুর (রাধানগর) গ্রামে নিজের প্রয়াত স্বামীর ভূমি নিয়ে প্রতিপক্ষ আব্দুল কুদ্দুছ এর ছেলে শাহদৎ হোসেন এর সাথে বিরোধ চলছে। শাহদাৎ হোসেন এলাকায় প্রভাবশালী থাকায় মৃত সজ্জাদ মিয়ার নামীয় প্রায় ২৩ শতক ভূমি জবর দখল করে নিয়ে যান। এসব জমিতে মৎস্য খামার, ডেইরী ফার্ম স্থাপন করা হয়। এসব বিষয় নিয়ে শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদেও দু’দফা সালিশ অনুষ্ঠিত হলেও শাহদাৎ হোসেন বৈঠকের রায় না মেনে নানা অজুহাত তৈরি করে আসছেন। প্রতিপক্ষ জমি সংক্রান্ত বিরোধের অভিযোগ দেখিয়ে কমলগঞ্জ থানার শমশেরনগর ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদের নানাভাবে প্রভাবিত করে কয়েকদিন যাবত তাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়।
গত ১৯ জানুয়ারী দুপুরে এস.আই. শাহআলম সহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের নিয়ে সরেজমিন তদন্তে গিয়ে আমাদের কোন বক্তব্য না শুনে অশালিন ভাষায় গালিগালাজ করে এক পর্যায়ে এস.আই.শাহআলম কোন অভিযোগ ছাড়াই আমার দেবর ফরজান মিয়ার ছেলে মো. শামীমকে আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে যান। পুলিশ ফাঁড়িতে আনার পর ঐদিন সন্ধ্যায় শাহাদাৎ হোসেন বাদি হয়ে ফিশারীতে জাল ফেলে দেড় লাখ টাকার মাছ চুরির মিথ্যা মামলায় শামসুন্নাহার ও ছেলের বউ শিরিনা বেগম সহ ৬ জনকে আসামী করা হয়।
অভিযোগ করে শামসুন্নাহার, শিরিনা বেগম ও শামীম মিয়া বলেন, প্রতিপক্ষের মিথ্যা মামলা থেকে জামিন লাভ করতে গত ২১ জানুয়ারী মৌলভীবাজার আদালতে গেলে শমশেরনগর ফাঁড়ির এস.আই. শাহ আলম এর নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে শাহদাৎ হোসেন তার ছেলে ও ভাড়াটিয়া আলমাছ মিয়াগং দলবল নিয়ে আমাদের দখলীয় ভূমি জবরদখল করে নেন। প্রতিপক্ষরা আমাদের মালিকানাধীন ও দখলীয় ভূমি জবর দখল, পুলিশি ভূমিকা এবং অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করার সুবিচার দাবি করছি।
অভিযোগ বিষয়ে শাহদাৎ হোসেন বলেন, সংবাদ সম্মেলনে উত্তাপিত অভিযোগ ভিত্তিহীন। অভিযোগকারীদের সাথে জমি বিনিময় করে মাছের খামার করা হয়েছে প্রায় ১৪ বছর পূর্বে। অভিযোগকারীদের জমির দাগ খতিয়ানের কিছুটা ত্রুটির কারনে বিনিময় সংক্রান্ত জমি রেজিষ্টেশন করা যায়নি। এ সুযোগে তারা এখন জমির মালিকানা দাবি করছে। তাছাড়া পুলিশি উপস্থিতিতে কোন জমি দখল করা হয়নি।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির এস.আই শাহআলম বলেন, আমি ঘটনাস্থলে কোন সময়েই যাইনি। আমার উপর আনীত অভিযোগ সঠিক নয়।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরুপ কুমার চৌধুরী বলেন, তাদের উভয়পক্ষের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে শামীমদের পক্ষ বেড়া উপড়ে ফেলে। এই ঘটনা তদন্তে গেলে শামীম অশালীন আচরণ করে। পরে তাকে গ্রেফতার করে শাহদাৎ হোসেন এর মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়।
Post Views:
0