কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:
আউশ, আমন, বোরো ও রবি শস্য উৎপাদনে মৌলভীবাজারের সীমান্তবর্তী কমলগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা খাদ্য যোগানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। চলতি রবি মৌসুমে টমেটোরও ব্যাপক চাষাবাদ এবং বাম্পার ফলনও হয়েছে। টমেটো, বেগুন, আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিমসহ শাকসবজির চাষাবাদে কৃষকদের উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি নেই। তবে উৎপাদনের পর দাম ভালো না থাকায় অনেকেই নামে মাত্র মূল্যে উৎপাদিত সবজি বিক্রি করতে বাধ্য হন। ফলে এসব কৃষকরা লাভের মুখ দেখতে পান না বলে অভিযোগ তোলেছেন। কৃষি অধ্যূষিত এই উপজেলায় একটি সংরক্ষাণাগার স্থাপিত হলে চাষি পর্যায়ে এই সমস্যা কাটিয়ে লাভবান ও কৃষি উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন। জানা যায়, চলতি রবি মৌওসুমে এ পর্যন্ত ২৫০ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। রবিশস্য চাষাবাদ হয়েছে ১৫শ’ হেক্টর জমি। তবে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে কেউ কেউ বারো মাসও টমেটো চাষাবাদ করেন। শীত মৌসুম আসার আগেও ৩০ থেকে ৫০ হেক্টর পরিমাণ জমিতে গ্রাফটিং টমেটোর চাষাবাদ করা। এছাড়াও বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলু, শিম, মূলাসহ ও শীতকালীন শাকসবজির ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে। জেলার মধ্যে কৃষি উৎপাদনে এ উপজেলা ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেছে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার কমবেশি স্থানে রবিশস্য উৎপাদন হয়। তবে আদমপুর, মাধবপুর ও আলীনগর ইউনিয়নে অধিক পরিমাণে শাক-সবজি চাষাবাদ হয়। এসব ইউনিয়নে সরিষারও আবাদ করা হয়। তবে সময় মতো কৃষকরা ন্যায্য দাম না পেয়ে নামে মাত্র মূল্যে সবজি বিক্রি করতে বাধ্য হন। কৃষক মোবাশ্বির আলী, ব্রজেন্দ্র মোহন সিংহ, মানিক মিয়া বলেন, ইতিমধ্যে যারা টমেটো বাজারজাত করছেন তারা কিছুটা লাভবান হচ্ছেন। তাছাড়া কয়েকদিন পর যারা টমেটো বাজারজাত করবেন তারা সেভাবে লাভবান হতে পারবেন না। গাছে গাছে এখন টমেটো, বেগুন ধরতে শুরু করেছে। সেগুলো বাজারে তোলার পর দাম একেবারেই কমে যায়। কৃষকরা বলেন, টমেটো, বেগুন, আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, সরিষা সহ শীতকালীন সকল শাক-সবজির চাষাবাদ বেড়েছে। তবে সময় মতো ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায় না। ফলে সকল দিক বিবেচনা করে কৃষকদের লাভের সুযোগ থাকে না এবং সেভাবে লাভবান হওয়া যায় না। উপজেলায় সংরক্ষণাগার থাকলে দাম কমে গেলে সেখানে রেখেও পরে বিক্রি করে যথেষ্ট লাভবান হওয়ার সুযোগ ছিল। কৃষকরা বলেন, এ উপজেলায় কৃষকদের সুবিধার্থে সংরক্ষণাগার স্থাপনের দাবি দীর্ঘদিনের। কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা বলেন, টমেটোসহ রবিশস্যের জন্য কমলগঞ্জ ব্যাপক পরিচিত। এসব সবজির ভালো চাষাবাদ ও উৎপাদন হচ্ছে। তবে এখানে হিমাগার বা সংরক্ষণাগার থাকলে সেটি কৃষকদের জন্য আরও ভালো হতো এবং কৃষকরা বিপুল উৎসাহ নিয়ে কৃষিতে অধিকতর মনোযোগী হয়ে উঠতেন।
কমলগঞ্জে সংরক্ষণাগারের অভাবে রবি শস্য চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ
