স্টাফ রিপোর্টার:
চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারে ট্রেনের টিকেট কিনতে গিয়ে বিরম্ভনার শিকার হয়েছেন। টিকেট কালোবাজারীদের মাধ্যমে বিক্রি করা হচ্ছে এমন অভিযোগ দিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। শ্রীমঙ্গলে বসে শায়েস্থাগঞ্জ টু ঢাকার টিকেট নিয়ে রাজধানীতে গেছেন এমন তথ্যও দিয়েছেন তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৌলভীবাজার সদরের এক আইনজীবি জানান, “ট্রেনের টিকেট কেনা একটা কমন প্রবলেম”। তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গলে যেদিন টিকেট ছাড়ে এক সপ্তাহ আগে টিকেট দেয়ার জন্য অনুমতি দেয় কর্তৃপক্ষ। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ষ্টেশনে গিয়ে ঢাকার দুটা টিকেটের কথা বললে কর্তৃপক্ষ বলে “ফাষ্ট ক্লাশ নাই চেয়ার নাই শুভন আছে তবে এনে দিতে হবে”। তিনি আরো জানান, সিলেটের মাইজগাঁও রেলষ্টেশন থেকে সাইস্থাগঞ্জের টিকেট কাটা হয় শায়েস্থাগঞ্জ টু ঢাকা। এসব ফাষ্টক্লাশ টিকেট কাটার সাথে সিলেট, মাইজগাঁও ও শ্রীমঙ্গলের ষ্টেশনে একটি চক্র যুক্ত আছে বলে জানান তিনি।
মৌলভীবাজার প্রতিদিনকে আরো বলেন, শায়েস্থাগঞ্জের টিকেট এক সপ্তাহ আগে মাইজগাঁও থেকে কাটা হয়। শায়েস্থাগঞ্জের যাত্রীরা ৬/৭দিন আগে মাইজগাঁও গিয়ে টিকেট কেনা সম্ভব না। এটা কালো-বাজারী ছাড়া করতে পারবেনা।
ওই আইনজীবি জানান, তিনি ৩/৪ দিন আগে শ্রীমঙ্গল রেল ষ্টেশনে দুটি টিকেটের জন্য গেলে কর্তৃপক্ষ বলে টিকেট নাই। কর্তৃপক্ষ জানায়, দুটো শুভন টিকেট সিলেট থেকে এনে দিতে হবে। পরে তিনি কুলাউড়া ষ্টেশন থেকে লোক লাগিয়ে দুটো টিকেন আনেন। তিনি বলেন,“টিকেটে লেখা দেখলাম শায়েস্থাগঞ্জ-টু ঢাকা। কিন্তু এই টিকেটটি মাইজগাঁও থেকে ৬/৭দিন আগের ইস্যূ করা।
মৌলভীবাজার শহরের অগ্রণী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, শ্রীমঙ্গল ষ্টেশনে কর্তৃপক্ষ টিকেট কেটে দালালদের কাছে বিক্রি করে। এই বিক্রির সাথে বুকিং সহকারি জড়িত। তিনি আরো জানান, গেল শুক্রবার সকাল সোয়া ৮টার দিকে শ্রীমঙ্গলে ৪টি টিকেট কিনতে গেলে বুকিং সহকারি কবির বলেন, টিকেট নাই একজন এসে ১২টি টিকেট নিয়ে গেছে। তখন তিনি তাকে প্রশ্ন করেন একজন লোককে ১২টি টিকেট দিলেন কেন? পরে নিরুপায় হয়ে তিনি বাসায় ফিরে যান।
শনিবার আলাপচরিতা হয় শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে ষ্টেশন ম্যানাজার শাখাওয়াত হোসেন’র সাথে। তিনি বলেন, আমাদের এখানে যারা আসে সবাই টিকেট পায়। তবে, যাত্রীর তুলনায় এখানে টিকেট কম দেয়া হয়। ঢাকা-চট্রগ্রাম মিলিয়ে প্রতিদিন এখানে ২৯৮ টি টিকেট বরাদ্দ রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে কুলাউড়া রেলস্টেশনে একাধিক নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়, টিকেট কাউন্টারে দায়িত্বরত বুকিং ক্লার্কের সাথে যোগ সাজশে কালোবাজারিরা এসব টিকেট কিনে নেয়। তারাও ক্লার্কের কাছ থেকে টিকেট প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি দিয়ে কেনে। পরে সেই টিকিট যাত্রীদের কাছে দ্বিগুণ-তিনগুণ বেশি টাকায় বিক্রি করে।
এছাড়াও সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়ের কুলাউড়া সেকশনের ঊর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মোহাম্মদ এরফানুর রহমানকে ঘুষের টাকা গ্রাহণকালে হাতেনাতে গ্রেফতার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক হবিগঞ্জ জেলা সম্মলিত জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মলয় কুমার সাহা’র নেতেৃত্বে ৫ সদস্যের একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁর অধিনস্ত কর্মচারী রেলের ওয়েম্যান আবুল হোসেনের কাছ থেকে ঘুষ (মাসোহারা) গ্রহনের সময় অভিযান চালিয়ে তাকে ঘুষের ১০ হাজার টাকাসহ হাতেনাতে আটক করেন।