জুড়ী প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের জাঙ্গিরাই গ্রামে প্রতিষ্ঠিত জাঙ্গিরাই দাখিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলভী কবির আহমেদকে বহিস্কার করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। গত ২৬ অক্টোবর মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তাকে ৫ দিনের সময় বেধে দিয়ে শোকজ নোটিশ প্রদান করে। নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত আরো ২দিন সময় নিয়ে কবির আহমদ শোকজের জবাব দেন। তার জবাবের আলোকে গত ১১ নভেম্বর এ নিয়ে মাদরাসার এডহক কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির বৈঠকে অবশেষে তাকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
জানা যায়, ওই মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ওই শিক্ষক শ্লীলতাহানী করায় ছাত্রীর অভিভাবক মাদ্রাসা সুপারকে মৌখিকভাবে তা অবহিত করেন। পরে ওই ছাত্রী তার উপর যৌন নির্যাতনের বিবরণ দিয়ে সুপার বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করে। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে রাতের আঁধারে কতিপয় মোড়লকে নিয়ে ওই ছাত্রীর বাড়িতে যান শিক্ষক কবির আহমেদ। ছাত্রীর বাবা-মায়ের পায়ে ধরে ক্ষমা চান এবং জীবনে আর এমন ভুল করবেনা বলে প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় উপস্থিত গ্রাম্য মোড়ল মানিক সরদার ছাত্রী এবং তার মা-বাবার সামনে কবির আহমেদকে চড়-থাপ্পর মেরে বিষয়টি ধামা-চাপা দেয়ার চেষ্টা চালান। পরদিন বিষয়টি গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী এবং বিভিন্ন ছাত্রীর অভিভাবকরা ফুঁসে উঠেন। এ অবস্থায় দু’দিন অতিবাহিত হয়।
গত শুক্রবার গ্রামের জামে মসজিদে অপর এক ছাত্রীর অভিভাবক ওই গ্রামের কাজল মিয়া উপস্থিত মুসল্লিদের নিকট এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার প্রার্থী হলে উত্তেজিত গ্রামবাসী শিক্ষকের বিচার এবং বহিস্কারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকেন। এ সময় গ্রামের বিশিষ্ট মুরুব্বী মুজিবুর রহমান আজিজী উত্তেজিত জনতাকে থামাতে রবিবার সকাল ১০টায় বিচারের আশ্বাস দিলে এবং জুড়ী থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক বাশারের নের্তৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিক্ষুদ্ধ জনতাকে থামিয়ে দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও সাপ্তাহিক এবং অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হলে জুড়ীতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
এদিকে গত রবিবার সকাল ১০টায় গ্রামবাসী বিচার প্রার্থীরা মসজিদ মাঠে জড়ো হতে থাকে। এসময় লম্পট শিক্ষক কবির আহমেদ গ্রামের কতিপয় ব্যক্তির শেল্টার নিয়ে মাদ্রাসায় ক্লাস নিতে আসলে উত্তেজিত জনতা থাকে মাদ্রসায় অবরুদ্ধ করে রাখেন। উত্তেজিত জনতার প্রতিরোধের মুখে শিক্ষক কবির মাদ্রাসার প্রাচীর টপকে পালিয়ে যায়। পরে জনতা গণস্বাক্ষর দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে পিটিশন দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইতিপূর্বেও ওই লম্পট শিক্ষক বেশ কয়েকবার নারী ঘটিত কেলেষ্কারীতে জড়িয়ে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা নং- ৩১৮/২০০৮ বিচারাধীন রয়েছে।