স্টাফ রিপোর্টার:
২৮ অক্টোবর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪৭ তম শাহাদত বার্ষিকী। ১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর ভোর রাতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কমলপুর সাব সেক্টর থেকে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ধলই সীমান্ত চৌকিতে প্রবেশ করে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন তিনি। স্বাধীন বাংলার জন্য তাঁর সর্বোচ্চ ত্যাগ নিজের জীবন বিলিয়ে দেওয়ায় বাঙ্গালী জাতি তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করে। কিন্তু স্বাধীন দেশের মাটিতে রচিত পাঠ্য পুস্তকে আজও তার শেষ রনাঙ্গণ নিয়ে সমাধান হয়নি তথ্য বিভ্রাটের। এ কারনে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জানছে ভুল ইতিহাস।
ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার খোরদা খালিশপুর গ্রামের সন্তান সিপাহী হামিদুর রহমান। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে যে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধাকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয় সিপাহী হামিদুর রহমান তাদের একজন। কিন্তু ৪৭তম বিজয় দিবসের প্রাক্কালেও তার শেষ রক্ত ঝরা কমলগঞ্জের ধলই সীমান্ত চৌকির কথা যথাযথ ভাবে পাঠ্যপুস্তকে স্থান না পাওয়া, সরকারী বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে কমলগঞ্জের ধলই সীমান্তকে শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, সিলেটের ধলই বলে প্রচার করায় ক্ষোভের কমতি নেই কমলগঞ্জবাসীর।
স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘ সময় পর ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর উদ্যোগে সর্বপ্রথম কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্ত চৌকির পাশে নির্মাণ করা হয় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের স্মৃতিফলক। ২০০৬ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ১০ শতাংশ জায়গার উপর সাড়ে ১৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গণপূর্ত বিভাগ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে। সাথে সাথে কমলগঞ্জের ভানুগাছ-মাধবপুর সড়কটিকে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের নামে নামকরণ করা হয়।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড অনুমোদিত চতুর্থ শ্রেণীর ‘আমার বাংলা বই’ এর ৭১নং পৃষ্ঠায় রচিত “বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান” পাঠের প্রথম অংশে উল্লেখ করা হয় “সিলেটের সীমান্ত এলাকা। শ্রীমঙ্গল থেকে ১০ মাইল দক্ষিনে ধলই সীমান্ত ঘাটি”। যাহা তথ্যগত ভাবে সম্পূর্ণ ভূল। বাস্তবে এই ধলই সীমান্ত কমলগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। আগষ্ট ২০১২ থেকে নতুন করে প্রকাশিত চতুর্থ শ্রেনীর বাংলা বইয়ে ‘‘বীরশ্রেষ্ঠর বীরগাথা’’ পাঠে শ্রীমঙ্গল থানার ধলাই সীমান্ত ফাঁড়ি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তথ্যগত এই ভুল সংশোধন হয়নি ৪৭ বছরেও। বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার বিভিন্ন সভা, সেমিনারে কথা বলা হয়, এমনকি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদনও করা হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।