কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:
প্রেমের মরা জলে ডুবেনা! দীর্ঘদিনের অবলা প্রেম, আর কৃষ্ণলীলা মোহে মেতে উঠে প্রেমিকের অনৈতিক কত চাহিদা মেটাতে হয়েছে শারিরিক সম্পর্কের মাধ্যমে। যখনই অর্ধাঙ্গীনী করে সারাজীবনের জন্য স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ঘরে তুলার দাবী তুলে অবলা প্রেমিকা, তখনি ভন্ড প্রেমিকের আসল চেহারাটি বেরিয়ে আসে। টালবাহানা শুরু করে দেয় । এতদিনের করা রাধা-কৃষ্ণ আর চন্দ্রিদাস-রজকিনীর মত মধুর প্রেমলীলায় ভাটা পড়ে তাদের।
এতে দমে থাকেনি প্রেমিকা। কারণ হৃদয়ের লেনাদেনা বলে কথা। স্ত্রীর মর্যাদা দেয়ার দাবীতে শালিস বৈঠক ও বসায় এই প্রেমিকা। কিন্তু তাতেও সমাধান না পেয়ে অতঃপর মৌলভীবাজার মহিলা কলেজের ছাত্রীটি স্ত্রীর মর্যাদা দেয়ার একদফা দাবীতে প্রেমিকের বাড়ীতে অনড় অবস্থান নেয়। এ ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের বৃন্দাবনপুর গ্রামে গত শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) রাতে। এই নিয়ে এলাকায় চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। এ ঘটনায় এলাকার কিছু কুচক্রী মহল ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে ফায়দা হাসিল করার পায়তারা করছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের নিজ বৃন্দাবনপুর গ্রামের নীলমনি দাসের ছেলে ওমান প্রবাসী সজল দাস এর সাথে বৈরাগীরচক (বৃন্দাবনপুর) গ্রামের প্রদীপ দাসের মেয়ে প্রিয়াংকা দাস (১৯) এর সাথে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। পিয়াংকা দাস এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমি যখন ক্লাস ৮ম শ্রেণীতে পড়ি তখন থেকে আমাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্প্রতি ওমান থেকে সজল দেশে ফিরে এসে আমার সাথে দেখা করে। আমাকে চাপ সৃষ্টি করে অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমার সাথে দিনের পর দিন শারিরীক সর্ম্পক গড়ে তুলে এবং গোপনে মুঠোফোনে তা ধারণ করে। এই ধারণকৃত দৃশ্য বিভিন্ন লোকজনকে দেখানো হয়। এতে মেয়েটির অসম্মান বোধ করলে পরিবারের লোকজনরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বিচার প্রার্থনা করেন।
এ ব্যাপারে পতনঊষার ইউপি সদস্য মো: কদ্দুছ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তাদের প্রেম দীর্ঘ দিনের। বিষয়টি সমাধানের জন্য বর্তমান চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার তওফিক আহমেদ বাবু ও সাবেক চেয়ারম্যান সেলিম আহমদ চৌধুরীসহ এলাকার নেতৃবৃন্দ বৃন্দাবনপুরস্থ সুধীর দাসের বাড়ীতে বৈঠকে বসেন। শালিস বৈঠকে প্রেমিক সজল সম্পর্কের কথা স্বীকার করে। একপর্যায়ে সজলের মুঠোফোন চেক করা হলে তার ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও পাওয়া গেলে চেয়ারম্যান মুঠোফোনটি জব্ধ করে পরবর্তীতে শালিস বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তী বৈঠকে উভয় পক্ষের লোকজন উপস্থিত হলেও প্রেমিক সজল উপস্থিত হয়নি। তাই বিচারকগণ আগামী দুদিনের মধ্যে সজলকে উপস্থিত করার জন্য তার পিতাকে সময় বেধে দেয়া হয় ।
এ ব্যাপারে পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার তওফিক আহমেদ বাবু বলেন, ছেলেটি বিষয়টি প্রথম পর্যায়ে অস্বীকার করলেও মুঠোফোনের আলামতে তা প্রমাণিত হয়। ২য় বৈঠকে ছেলে উপস্থিত না হওয়ায় এবং পক্ষরা বিষয়টি মানতে রাজি না হওয়ায় সমাধান হয়নি। এলাকার কিছু অতি উৎসাহী লোকেরা বিষয়টি নিয়ে হট্টগোল করছেন। তিনি আইনের আশ্রয় নেয়ার জন্য পরামর্শ দেন বলে জানান।
সরেজমিন রাত সাড়ে ৮টায় সজল দাসের বাড়ীতে প্রেমিকা প্রিয়াংকা দাসের সাথে আলাপকালে সমুহ ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে বলেন, আমি কিছুই বুঝিনা আমার একটাই দাবী সজল যতক্ষন না আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিচ্ছে ততক্ষন পর্যন্ত আমার অবস্থান ছাড়বোনা। তিনি আরও বলেন কেউ যদি আমাকে এ ঘর থেকে বের করার চেষ্টা করে তাহলে আমার লাশ বের হবে।
এ ব্যাপারে সজল দাসকে খোঁজে না পেলেও তার পিতা নীলমনি দাস বলেন, এলাকার কিছু মানুষ জোর করে মেয়েটিকে আমার বাড়িতে এনে দিয়ে গেছে। সজলের বড় ভাই সুবল দাস বলেন, আমার ভাই সজল দাস কয়েকদিন ধরে বাড়ীতে নেই। কোথায় গেছে বলে যায়নি। এই মেয়েটিকে জোর করে কিছু লোক দরজা ভেঙ্গে ঘরে তোলে দিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আরিফুর রহমান জানান, এরকম একটি ঘটনা শুনেছি। তবে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত ক্রমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।