নিজস্ব প্রতিনিধি:
শারদীয় দুর্গা পূজাকে সামনে রেখে মৌলভীবাজার জেলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূজা মন্ডপ তৈরির প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন রঙের কাজ চলছে। শিল্পিরা প্রতিমা তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করছেন এঁটেল মাটি, বাঁশ, কাঠ, খড়, পাটের আঁশ ও রঙ।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মৌলভীবাজার জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ জানান, এবার জেলায় ৮৪২টি মন্ডপে পূজা হবে। এর মধ্যে শার্বজনীন ৬৭৯টি ও ব্যক্তিগত ১৬৩টি। জেলায় মন্ডপের দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে কুলাউড়া উপজেলা। সেখানে ১৯১টি মন্ডপে পূজার প্রস্তুতি চলছে। পিছিয়ে আছে জুড়ী উপজেলা। সেখানে ৬৫টি মন্ডপ স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সরেজমিন বিভিন্ন মন্দিরে গেলে দেখা যায়, প্রতিমা শিল্পীদের নান্দনিক ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে পূজামন্ডপের জন্য দূর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গনেশ, অসুর, সিংহ, মহিষ, পেচা, হাঁস ও সর্পসহ প্রায় ১২ টিরও বেশি প্রতিমা। শারদীয় দুর্গোৎসবকে পরিপূর্ণ রূপ দিতেই মন্দিরগুলোতে চলছে এক কথায় ব্যাপক প্রস্তুতি। প্রতিমা শিল্পীর কল্পনায় দেবী দুর্গার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ দিতে রাতভর জেলা জুড়ে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ।
কোনো কোনো মন্ডপে প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি সাজসজ্জার প্রস্তুতিও চলছে। আগামী ১৫ অক্টোবর মহাষষ্ঠি থেকে শুরু হয়ে বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে ১৯ অক্টোবর শেষ হবে পূজা। স্থানীয় কারিগর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কারিগররা এখানে এসে তৈরি করছেন মাটির প্রতিমা। এ পূজাকে কেন্দ্র করে থেমে নেই ঢাক, ঢোল ও বাদ্যকাররা। তারা বাদ্যযন্ত্র ঠিকঠাক করে নিচ্ছেন।
জেলার সবচেয়ে বড় পূজামন্ডপ সৈয়ারপুর ত্রিনয়নী শিব বাড়ী এবারো পূজায় প্রতিমা তৈরীতে ভিন্ন মাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। শিব লিঙ্গের আদলে দৃষ্ঠিনন্দন বিশাল প্যান্ডেল আর ২৫ ফুট উচ্চতার শত নয়না নীলবর্ণা দেবী দূর্গা প্রতিমা তৈরী করা হচ্ছে। আরও ৫০টি মূর্তির সমন্বয়ে পূজার আয়োজন করছে হরিজন পূজা মন্ডপ। এছাড়া আবাহন, নতুন কালীবাড়ী সুহৃদ সংঘ সহ জেলার অন্য সব মন্ডপে ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে।
এবিষয়ে জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সহ-সভাপতি অসিত দেব বলেন, দূর্গাদেবীকে বরণ করতে জেলাবাসী প্রস্তুত। শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ইতি মধ্যে পুলিশ প্রশাসন আমাদের সাথে মতবিনিময় করেছে। আমরা আশাবাদি অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার শান্তি ও সুন্দর ভাবে দুর্গা উৎসব সমাপ্ত হবে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল জানান শান্তি পূর্ণ ভাবে, নিরাপদে আর উৎসবের আমেজে দূর্গা পূজা উদযাপনের জন্য চারস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতি মধ্যে জেলার সকল পূজা মন্ডপের সাথে সমন্বয় করা হয়েছে।