ষ্টাফ রিপোর্টার
দুটি মামলায় ওয়ারেন্ট দেখিয়ে গ্রেফতার করা হয় কাতার প্রবাসী শিপন মিয়াকে। তাকে কারাগারে পাঠানোর পর তার স্বজনরা মামলার সংশ্লিষ্ট আদালতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন আদালে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলাই নেই। একটি চক্র ভুয়া ওয়ারেন্টে তৈরি করে তাকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ ভুয়া ওয়ারেন্টে যাছাইবাছাই না করে ২৬ আগষ্ট শিপনকে গ্রেফতার করে। কাতার প্রবাসী শিপন মিয়া মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের ইসলামনগর গ্রামের বাসিন্দা।
মানব পাচার মাদক মামলায় ভুয়া ওয়ারেন্টে ১৩ দিন কারাবাস করে গত ৬ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। মৌলভীবাজার ৫নং আমলী আদালতের বিচারক তাকে জামিন দেন।
আদালত জানান, যে ওয়ারেন্টে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই মামলা ভুয়া ছিল। পুলিশের কোনো রকম যাচাই বাছাই ছাড়াই ভুয়া ওয়ারেন্টে গ্রেফতারের ফলে তাকে কারাবাস করতে হয়েছে।
প্রবাসী মোঃ শিপন মিয়া বলেন, বিয়ের ১০দিন পর পুলিশ ভুয়া ওয়ারেন্ট নিয়ে আমাকে গ্রেফতার করে। কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জকে অনেক অনুরোধ করেছি। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে আমাকে গ্রেফতার করার জন্য। তিনি আমাকে সময় না দিয়ে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করেন। এতে আমি সামাজিক, মানসিক ও আর্থিক ভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। ক্ষতিপূরণসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী জানাচ্ছি। একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রের কাছ থেকে ন্যায় বিচার পাবার অধিকার আমার আছে কি? একটি মহল তাকে হয়রানি করার জন্য সুপরিকল্পিতভাবে ভুয়া ওয়ারেন্ট তৈরি করেছে। এদের সনাক্ত করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিলে হয়তো আগামীতে কোনো নিরপরাধ মানুষ হয়রানির স্বীকার হবে না।
আসামি পক্ষের আইনজীবি এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম সিরাজী জানান, সদ্য দেশে আসা কাতার প্রবাসী মোঃ শিপন মিয়াকে কুলাউড়া থানার পুলিশ ২৬ আগস্ট গ্রেফতার করে। যে গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট মূলে তিনি গ্রেফতার হয়েছেন সেই মামলার এজাহার, এফআইআর ও চার্জশীটে আসামীর নাম ও ঠিকানা নাই। সংশ্লিষ্ট মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল, সিলেট আদালতে খোঁজ নিয়ে এই ধরনের কোনও মামলার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ভুয়া ২টি মামলা দেখানো হয়েছে। প্রত্যেকটা সার্চিং স্লিপ উত্তোলন করে এনেছি। যারা ষড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়ে ভুয়া ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করিয়েছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’র দাবি করছি।
তিনি বলেন, পুলিশ প্রশাসনের উচিত ছিলো ওয়ারেন্টে কপির সত্যতা যাচাই করে আসামিকে গ্রেফতার করা। এখন পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে ষড়যন্ত্রকারীরে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। যাতে আর কোনও নিরাপরাধী এভাবে ভুয়া ওয়ারেন্টে জেল না খাটে।
এ বিষয়ে কুলাউড়া থানার ওসি মোঃ আব্দুছ ছালেক জানান, বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে পুলিশ সুপার কার্যালয় ও কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক এর মাধ্যমে ওয়ারেন্ট সংশ্লিষ্ট থানায় আসে। এখানে যাছাই করার সুযোগ থাকেনা। বিষয়টি দুঃখজনক। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের সনাক্ত করা প্রয়োজন।