স্টাফ রিপোর্টারঃ দেড় দু মাসের পিঁয়াজ ক্রাইসিসে মৌলভীবাজার জেলার ১২ থেকে ১৫ জন মহাজন তাদের ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট ও প্রজ্ঞাবলে সাধারণ ভোক্তাদের পকেট থেকে কমপক্ষে ২/৩’শ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের এ বাধা বিপত্তিহীন মুনাফাবাজীর নিকট জিম্মি হয়ে পড়েছে সাধারণ ভোক্তা এমনকি ক্ষুদ্রব্যবসায়ীরা পর্যন্ত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে- শ্রীমঙ্গলের ১২টি ও মৌলভীবাজার জেলা সদরের ৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে জেলার পেঁয়াজের বাজার। এব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো সরাসরি চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ থেকে পিঁয়াজের চালান নিয়ে আসে। অত:পর এখান থেকে পাইকারি ভাবে সবকটি উপজেলাতে সরবরাহ করে। জেলার সীমানা ছাড়িয়ে বাহুবলের মীরপুর, নবীগঞ্জ, ইনাতগঞ্জ, বালাগঞ্জ এবং গোয়ালাবাজার পর্যন্ত তারা মালামাল সরবরাহ করে থাকে। আমদানী নির্ভর পিঁয়াজপণ্য ভোক্তাদের নিকট শাপ হলেও এই সিন্ডিকেটের নিকট তাহা বর হয়ে উঠে, যেদিন থেকে ভারত পিয়াজ রপ্তানী বন্ধের ঘোষণা দেয়। খবর নিয়ে জানা গেছে, এই ঘোষণা যখন আসে তখন প্রতিটি মহাজনের গোদামে দেড় দু’শ বস্তা পেঁয়াজের মজুদ ছিলো। কিন্তু ষ্টক নেই এই অজুহাতে এই ব্যবসায়ী চক্র পিঁয়াজ নিয়ে অবাধ মুনাফাঘোড়ার সোয়ার সেজে বসে। ৩৫ টাকার পিঁয়াজের কেজি উঠে যায় এক লাফে ৮০ টাকার পাইকারী মূল্যে। অত:পর ধাপে ধাপে মূল্য বৃদ্ধি। প্রতি মণ পিঁয়াজে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকার মুনাফা আসতে থাকে। এ মুনাফার কলেবর প্রসারিত হচ্ছে দিনের পর দিন। এক দিকে ভারত থেকে পিঁয়াজ আমদানী বন্ধ এবং অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে আমাদানীকৃত পিয়াজ খালাসের বিলম্বকে অজুহাত হিসাবে খাড়া করে পিঁয়াজের মনোপলি বাড়ানো হচ্ছে কৌশলে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে উল্লেখিত সিন্ডিকেট চট্টগ্রাম থেকে ট্রাকভর্তি পিঁয়াজ রাতের আধারে এনে শহর কিংবা শহরতলির নিরাপদ স্থানে মজুদ করছে। দোকানে উঠাচ্ছে সামান্য মাল যাতে পেঁয়াজের ক্রাইসিস দৃশ্যমান হয়। পরিচিত খুচরা ব্যবসায়ী ৪ বস্তা চাইলে দেয়া হয় ১ বস্তা। এভাবে সঙ্কট দেখিয়ে মুনাফা লুটে নেয়া হচ্ছে দু হাতে। এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক বলেন- মানুষকে দুর্গতিতে ফেলে দিয়ে একশ্রেনীর লুটেরা রাতারাতি ধনকুবের হবার মৌসুম এদেশে বার বার আসে। পিঁয়াজের উপর ভর করে এবারও সে লুটেরাপনা চলছে। মানুষের পকেট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মূল্যবৃদ্ধির নামে। এরা দাপুটে বিধায় কাউকে পরোয়া করছে না।
অপর এক গ্রাহক বলেন- দেশের বিভিন্ন স্থানে মজুদ পেঁয়াজ উদ্ধার করা হচ্ছে। কিন্তু মৌলভীবাজারে এমন খবরতো শুনলাম না। উল্লেখ্য- বাজার মনিটরিয় এর নামে শহরকেন্দ্রীক বিভিন্ন স্থানে প্রশাসনিক তৎপরতা চললেও রাঘব বোয়ালরা রহস্যজনক ভাবে ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।