স্টাফ রিপোর্টার ঃ ৫৫ ঘন্টার মধ্যে মৌলভীবাজারে জেলা পুলিশ, ডিবি ও র্যাবের যৌথ অভিযানে অপহরণকৃত এক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল গভীর জঙ্গল থেকে ২ অপহরণকারী সহ ৩ জনকে আটক করা হয়। অপহরণ কারীরা মোবাইলে ফোনে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে।
৪ জুন সন্ধ্যা ৬.০০ ঘটিকায় ব্যবসায়ী শশাংক কুমার দত্ত (৫৮) তার নিজবাড়ী বড়লেখার বারইগ্রাম হতে একটি সিএনজি চালিত অটো রিক্সাযোগে সিলেটে যাওয়ার পথে বিয়ানীবাজার মোল্লাপুর এলাকায় পৌঁছালে অপহরণকারী চক্রের একটি মাইক্রোবাস সিএনজি গাড়ীটি গতিরোধকরে ব্যবসায়ী শশাংককে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া সোমবার দুপরে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, ৪ জুন সন্ধ্যা ৬ ঘটিকায় শশাংক কুমার দত্ত তার নিজবাড়ী হতে সিলেট টিলাগড়স্থ ভাড়াটিয়া বাসার উদ্দেশ্যে বড়লেখা উত্তর চৌমুহনাস্থ পোষ্ট অফিসের সামনে থেকে একটি সিএনজি গাড়ী যোগে রওয়ানা করেন। শশাংক কুমার দত্ত বিয়ানীবাজার উপজেলার বারইগ্রামে সিএনজি পরিবর্তন করে সিলেট যাওয়ার উদ্দেশ্যে আরেকটি সিএনজি গাড়ীতে উঠেন। সিএনজি গাড়ী যোগে বারইগ্রাম হতে সিলেট যাওয়ার পথে সিলেটের বিয়ানীবাজার মোল্লাপুর রাস্তার সম্মূখে পৌঁছালে একটি মাইক্রোবাস তার সিএনজি গাড়ীটি গতিরোধককরে মাইক্রোবাসে তুলে জোরপূর্বক অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
অপহরণকারী চক্র শশাংক কুমার দত্তকে অজ্ঞাত স্থানে রেখে বিভিন্ন ভিওআইপি নাম্বার হতে তার ছোট ভাই সুবোধ কুমার দত্ত এর মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। ছোট ভাই এ বিষয়ে থানায় আইনগত সহায়তা চাওয়ার পরপরই তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে ৭ জুন মধ্য রাত দেড় ঘটিকায় বড়লেখার বাহাদুরপুর চা-বাগানের গভীর জঙ্গল থেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে ২ অপহরণকারী সহ ৩ জনকে আটক করা হয়।
আটক অপহরনকারীরা হলো ইসমাইল আহমেদ হারুন (১৯), জুলমান আহমেদ (৩২), সবুজ হেসোন (৩০)। তাদের প্রত্যেকের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার বোবারথল (ষাটঘড়ি)।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া নেতৃত্বে মাঠ পর্যায়ে অবস্থান নিয়ে উদ্ধারের অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়। এ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সাদেক কাউছার দস্তগীর, বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রতন চন্দ্র দেবনাথসহ বড়লেখা থানার অফিসার ফোর্স এবং জেলা গোয়েন্দা টিম ও র্যাবের একটি দল।
পুলিশ সুপার আরও জানান, অপহৃত ব্যক্তিকে যে ঘরে আটক রাখা হয় তা কৌশলে সনাক্ত করে জেলা পুলিশ, ডিবি ও র্যাবের যৌথ টিম ঘরটিকে নিরাপদ দূরত্বে ঘিরে ফেললে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ভিকটিমকে সাথে নিয়ে অপহরকারী ৭/৮ জন বাহাদুরপুর চা-বাগানের গভীর জঙ্গলে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এমতাবস্থায় যৌথ টিমের পর্যাপ্ত সদস্য থাকায় তাৎক্ষনিক অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার ও ২ জনকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সহিত জড়িত অন্যান্যদের আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।