হোসাইন আহমদঃ
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ফটো সেশনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে রোগীরা। ডাক্তারের কক্ষ থেকে বের হতে না হতেই রোগীর হাত থাকা প্রেসক্রিপশন নিয়ে ছবি তোলেন কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভরা। গ্রাম থেকে আসা রোগীরা প্রেসক্রিপশন দিতে না চাইলে অনেকের সাথে খারাপ ব্যবহারও করেন তারা। কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভদের ভিড়ে বৃদ্ধ, শিশু ও মহিলা রোগীরা সেবা নিতে এসে নাকাল হয়ে পড়ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এমনটি হচ্ছে বলে জেলার সচেতন মহলের অভিযোগ। সচেতন মহল বলছেন, রিপ্রেজেন্টেটিভদের লাগাম ধরে না রাখায় ক্রমান্বয়ে অনেকটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন তারা।
দেখা যায়, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এবং আরএমও অফিসের সামানেই হাসপাতালের ঔষধ বিতরণ কেন্দ্র। এখানে লাইন ধরে রোগীরা ঔষধ নেন। রোগী লাইনে থাকাবস্থায়ই কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভরা রোগীর হাত থেকে প্রেসক্রিপশনের ছবি তোলেন। এ জায়গা অনেকটা ফটোসেশন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারীরা দেখলেও কেউ প্রতিবাদ করেন না।
সরেজমিন সোমবার দুপুরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, বিভিন্ন কোম্পানীর ৮/১০ জন রিপ্রেজেন্টেটিভ জড়ো হয়ে রোগীর হাত থেকে প্রেসক্রিপশনের ছবি তোলছেন। এ সময় তারা প্রতিবেদক তাদের ছবি তোলছেন টের পেয়ে চলে যায়। রোগীর প্রেসক্রিপশনের কেন ছবি তোলছেন জানতে চাইলে আলাউদ্দিন নামের এক রিপ্রেজেন্টেটিভ প্রতিবেদককে বলেন, এ রোগী আমার আত্মীয়। তাই ছবি তোলছি। কিন্তু রোগী আত্মীয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন। হাসপাতালের ইমার্জেন্সি, নতুন ভবনের সামন ও বাহিরে দুই গেইট ঘুরে দেখা যায় অর্ধশতের উপরে রিপ্রেজেন্টেটিভ রোগীর প্রেসক্রিপশনের ছবি তোলছেন।
সদর উপজেলার লামুয়া গ্রাম থেকে আসা ফাতেমা নামের এক রোগী প্রতিবেদককে বলেন, ডাক্তারের কক্ষ থেকে বের হওয়ার পরেই কারা প্রেসক্রিপশনের ছবি তোলে নিয়ে যায়। ছবি তোলতে না দিলে ধমক দেয়। কয়ছর, ইমন, রহিম ও লিলু নামের রোগীরাও একই কথা বলেন।
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ পার্থ সারথি দত্ত কানোনগো বলেন, তাদেরকে মাঝে মধ্যে দৌঁড়িয়ে দেই। তার পরেও ফাঁক পেলে ঢোকে যায়। শীঘ্রই তাদেরকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
এবিষয়ে সিভিল সার্জন ডাঃ চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ বলেন, মানুষের বিবেক না থাকলে আপনি কি করবেন। তাদের কারণে চলাফেরা অনেকটা কষ্ট হচ্ছে যাচ্ছে।