হোসাইন আহমদঃ
একদিন পরেই মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে চশমা প্রতীক নিয়ে রয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন একই ঘরানার যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এম এ রহিম (সিআইপি)। ইলেক্টোরাল এ নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত কে বিজয়ের মালা পড়বেন এনিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে পরষ্পরের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি বাড়ছে প্রচন্ড। ইলেক্টোরাল ভোটারদের পাশাপাশি জেলার সচেতন মহলও প্রার্থীদের অতিতের ইতিবাচক ও নৈতিবাচক নানা দিক নিয়ে আলোচনা করছেন।
এনিয়ে জেলার সচেতন মহলের সাথে কথা হলে তারা বলেন, সংসদ সদস্যের পরেই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অবস্থান। জেলাবাসীর জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ব জায়গায়। এটা পরিচালনা করতে হলে বিশ্বস্থতা ও আমানতদারীতার প্রয়োজন। কিন্তু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কারো প্রতিই আস্তা রাখতে পাছেন না তারা। উভয়কে নিয়েই সচেতন মহলে নানা আলোচনা সমালোচনা রয়েছে।
এদিকে একটি বিশ্বস্থ সূত্র বলছে শেষ সময়ে এসে মরণ কামর দিয়ে মাঠে নেমেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ রহিম (সিআইপি)। যে কোনো মূল্যে তিনি এবার জেলা পরিষদের চেয়ারে বসতে চান। কিন্তু শনিবার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এম এ রহিমের টাকা বিতরণের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায় এম এ রহিম নিজে চেয়ারে বসে একটি রুমে খামের ভীতরে টাকা ঢোকিয়ে কিছু লোকের মধ্যে বিতরণ করছেন। এ ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পার এম এ রহিমের ভোটের পাল্লায় নৈতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এদিকে মৌলভীবাজার পৌর শহরের পুরাতন হাসপাতাল রোডে শুক্রবার রাতে কমলগঞ্জ উপজেলার ৩ জন প্রতিনিধির গাড়ি আটকিয়ে মোবাইল ছিনতাই ও শারিরীক লাঞ্চনার অভিযোগ উঠেছে আ’লীগ সমর্থিত প্রার্থী মিছবাহুর রহমানের কর্মীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু মিছবাহুর রহমানের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
আ’লীগ প্রার্থী মিছবাহুর রহমান স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, মোটরসাইকেল মার্কার প্রার্থী এম এ রহিম ভোটারদের মাঝে কালো টাকা বিতরণ করে ভোট কিনার চেষ্টা করছেন। নিজ গাড়িতে সরকারি স্টিকার ব্যবহার করছেন এবং ভোটারদের বিভিন্নভাবে অনৈতিক উপায়ে প্রভাবিত করে যাচ্ছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ রহিমের অভিযোগ, প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর কর্মীরা জেলার বিভিন্ন স্থানে আমার পোষ্টার ও বিল বোর্ড ইতিমধ্যে ছিড়ে ফেলছেন। প্রকাশ্যে টেবিলে ব্যালেট পেপার রেখে ভোট দেয়ার কথা বলছেন ভোটারদের। অন্যতায় ওই ভোটারকে কেন্দ্রে ঢোকতে দেয়া হবে না। অভিযোগ গুলো প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানালেও এখন পর্যন্ত কোনো পরিবর্তন দেখতে পারছি না। ভোটারদের মধ্যে কালো টাকা বিতরণের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। শনিবার বিকালে তিনি মিছবাহুর রহমানের ক্ষমতার অপব্যবহারের নানা চিত্র উল্লেখ করে সাংবাদিকদের কাছে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, দুই প্রার্থীই পক্ষে-বিপক্ষে অভিযোগ করেছেন। আমরা তার জবাব দিয়েছি। ভোটারদের মধ্যে টাকা বিতরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ পেলে আমরা নির্বাচনী আচরণ-বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো এবং স্বচ্ছভাবে যাতে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন আমরা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।