স্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে রাজস্ব খাতের আওতায় কৃষি প্রদর্শনী প্রাপ্ত কৃষকদের কাছ থেকে উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার নিজে ভুট্টা, সরিষা, সুর্ষমুখি, বিটি বেগুন ও বোরো ধান প্রদর্শনীতে তালিকাভুক্ত কৃষকদের কাছ থেকে নগদ উৎকোচ আদায় করে চেক প্রদান করেন। আবার একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকেও প্রদর্শনীর আওতায় আনা হয়েছে। একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে কৃষক না হয়েও অর্থের বিনিময়ে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রদর্শনীতে তালিকাভুক্ত হয়েছে কৃষক নয় এমন ব্যক্তিও। অথচ প্রকৃত কৃষকরা প্রদর্শনী থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, ভুট্টা প্রদর্শনীতে ৩০, সরিষা প্রদর্শনীতে ২০, সুর্ষমুখি প্রদর্শনীতে ৪৫, বিটি বেগুন প্রদর্শনীতে ১০ ও বোরো ধান প্রদর্শনীতে ২৬ জন কৃষকে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে রাজস্ব খাতের আওতায় সুবিধা দেয়া হয়। প্রদর্শনীর শুরুতে তাদেরকে সার ও বীজ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে দুই ধাপে তাদেরকে ১৫০০ টাকার চেক প্রদান করা হয়। ১৫০০ টাকার চেক প্রদানের সময় উপজেলা কৃষি অফিসার প্রত্যেকের কাছ থেকে নগদ ১’শ থেকে দেড় শত টাকা আদায় করেন। আবার অনেক কৃষক টাকা দিতে অপারগত প্রকাশ করলে কৃষি অফিসারের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। অনেকটা বাধ্য করে কৃষি অফিসার তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন।
উৎকোচ আদায়ের সত্যতা জানতে সরিষা প্রদর্শনী প্রাপ্ত উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের শুধাংসু দাসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসার খরচের কথা বলে আমার কাছ থেকে নগদ ১’শ টাকা নিয়েছেন। কর্ণিগ্রামের ইব্রাহিম মিয়াও ১’শত টাকা দেয়ার কথা স্বীকার করেন। ভুট্টা প্রদর্শনীতে উপজেলার একামধুর একই পরিবারের ইয়ামীর উদ্দিন চৌধুরী ও তার স্ত্রী আছিরুন বেগমের নামে প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে। বোরো প্রদর্শনী প্রাপ্ত পাঁচগাঁও ইউনিয়নের কৃষ্ণ দেব বলেন, ফিসের কথা বলে আমাদের কাছ থেকে ১৫০ টাকা নগদ নেয়া হয়েছে। মহাসহ¯্র গ্রামের আয়াছ মিয়াও উৎকোচ আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করেন। একইভাবে প্রদর্শনী প্রাপ্ত একাধিক কৃষকের সাথে কথা হলে তারা উৎকোচ দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
কৃষকদের অভিযোগ, সময় মতো প্রদর্শনী না দেয়ায় এবার ভালো ফলন হয়নি। দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অবহেলায় এমনটি হয়েছে।
রাজনগর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শাহাদুল ইসলাম নগদ টাকা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তি পেয়ে থাকলে ইউনিয়ন উপ-সহকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কৃষক নয় এমন ব্যক্তি পেয়ে থাকলেও এটা বাতিল করা হবে। প্রদর্শনীর সময়তো শেষ পর্যায়ে এটা কখন করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই মাসের মধ্যেই এগুলো করা হবে।