ষ্টাফ রিপোর্টার
বাড়িতে বিয়ের আনন্দ। বিয়ের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বাসায় আতœীয় স্বজনের সমাগম। কতই না আনন্দ ছিল বাসায়। এই আনন্দ বেশীক্ষণ স্থায়ী হয়নি আগুনের লেলিহান শিখায়। মুহূর্তেই বিয়ের পরবর্তী আনন্দ কেড়ে নিল আগুন। আগুনের লেলিহান শিখায় একই পরিবারের ৩জন সহ মারা গেলেন ৫জন।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সকল কিছু ঠিক ঠাক ছিল। সকাল ১০টা ২০মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত। মৌলভীবাজার এম সাইফুর রহমান রোডের দু’তলা বিশিষ্ট বাসাটিতে সুভাষ রায় তার পরিবার নিয়ে থাকতেন। সুভাষ রায়ের মেয়ের বিয়ে হয়েছিল বুধবার ২২ জানুয়ারী। গতকাল ছিল বৌভাত। বৌভাত শেষে অনেক আতœীয় চলে গিয়েছিলেন। যারা বাসায় রয়েছিলেন তাদের মধ্যে কয়েকজন বেরিয়ে আসলেও তারা বের হতে পারেননি।
আগুনের সূত্রপাত ঘটে ভবণের নিচতলার পিংকি সু স্টোর থেকে। খবর পেয়ে মৌলভীবাজার ফায়ার ষ্টেশন ও শ্রীমঙ্গল ফায়ার ষ্টেশন সহ ৪টি ইউনিট দেড় ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহতদের মধ্যে ছিলেন পিংকু ষ্টোরের সত্ত্বাধিকারী সুভাষ রায় (৬৫), সুভাষ রায়ের ছোট ভাই মনা রায়ের স্ত্রী দিপ্তী রায় (৪৫), সুভাষ রায়ের মেয়ে প্রিয়া রায় (১৫), সুভাষ রায়ের শ্যালক সজল রায়ের স্ত্রী দিবা রায় (৪০) ও তার ৪ বছরের শিশু বৈশাখী রায়। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।
দু’তলা এই কাঠের বিল্ডিংয়ের নিচে সুভাষ রায়ের দোকান ছিল। দোকানের ভিতরের সিড়ি দিয়ে যাতায়াত করতেন সুভাষ রায়ের পরিবার। সুভাষ রায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ডা. প্রভাত রায়ের ছেলে।
দোকানে কর্মচারী অরবিন্দু জানান, ২২ জানুয়ারী ছিল সুভাষ রায়ের মেয়ে পিংকির বিয়ে হয়। বিয়ে উপলক্ষে স্বজনরা তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ২৭ জানুয়ারী ছিল বৌভাত। বৌভাত শেষে অনেক স্বজনরাই তাদের বাড়িতেই ছিলেন। নিহতদের মধ্যে ৩জন পরিবারের ও ২জন আত্মীয়।
স্থানীয়রা বলছেন, সিগারেটের আগুন কিংবা কয়েলের ধোয়া থেকে আগুন লাগতে পারে বলে তারা ধারনা করছেন।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার ফায়ার ষ্টেশনের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ হারুন পাশা বলেন, গ্যাসের রাইজার ফেটে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত করে সঠিক কারণ উদঘাটন করা হবে । তবে মৌলভীবাজার জালালাবাদ গ্যাস ফিল্ডের ম্যানেজার আওলাদ হোসেন গ্যাস থেকে আগুনের সূত্রপাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমদ বলেন, খবর পেয়ে আমার ফোর্স ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করে।
জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে ১লক্ষ টাকা প্রদানের ঘোষণা দেন।
বিয়ের পরবর্তী আনন্দ কেড়ে নিল আগুন
