ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
সরকারি পর্য্যায়ে ধান ক্রয়কে কেন্দ্র করে রাজনগর উপজেলাতে অনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ দাঁনা বাধছে। গত বুধবার উপজেলা সদরে বিক্ষোভ শেষে এ অনিয়মের সুরাহা চেয়েছে স্থানীয় জনগণ।
জানাগেছে, চলতি আমন মৌসুমে রাজনগর উপজেলার কৃষকদের নিকট থেকে ১৪’শ ১৭ টন ধান ক্রয়ের সিন্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট খাদ্য বিভাগ। এ লক্ষে ইউনিয়ন পর্য্যায় থেকে কৃষি কার্ড ধারীদের তালিকা সংগ্রহ করে লটারীর ভিত্তিতে কৃষক বাছাই করে ধান ক্রয়ের পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। কিন্তু এ লটারী নিয়ে দেখা দেয় বিভ্রান্তি। আমন মৌসুমে যে কৃষক আমনধান চাষাবাদ করতে পারেনি কিংবা যার আমনধানের জমি নেই, এমন অনেক কৃষকদের নাম উঠেছে লটারীতে। এছাড়া একই মোবাইল নাম্বারের বিপরীতে কয়েকটি কৃষিকার্ড রয়েছে। এই আজগুবি লটারী নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় সংশ্লিষ্ট মহলে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে- কার্ডধারীদের তালিকা তৈরীর সময় ইউনিয়ন ভিত্তিক বøক সুপারভাইজার গণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে তালিকাতে গড়মিল তৈরী করেন। এ তালিকা অনুযায়ী লটারী অনুষ্ঠিত হবার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রাজনগরের ওসি. এল.এস.ডির নিকট যে তালিকা হস্তান্তর করেন, সেই তালিকাতেও কারুকাজ করেন গোদাম কর্মকর্তা। ফলে ধান ক্রয় বিক্রয় নিয়ে চরম বিভ্রান্তি নেমে আসে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে- ধান ক্রয় বিক্রয় নিয়ে কোটি টাকার বাণিজ্য করায়ত্ত করার জন্য রাজনগর উপজেলার তিনটি ধানের চাতাল এবং ইউনিয়ন পর্য্যায়ে তাদের নিয়োজিত ফাড়িয়া চক্র পূর্ব পরিকল্পিত ভাবেই একটি ছক তৈরী করে। সেই ছক অনুসারেই কৃষি কার্ডের তালিকা তৈরী করা হয়। এই তালিকা থেকেই লটারীর মাধ্যমে ধান বিক্রেতা কৃষক বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। যাদের অধিকাংশের কৃষি কার্ড চলেগেছে ফাড়িয়াদের আয়ত্তে। অগ্রহায়ন মাসে ফড়িয়া চক্র ৫’শ টাকা মণ দরে যে ধানক্রয় করেছে, এখন একহাজার টাকা মূল্যে সেই ধানই খাদ্য বিভাগকে সরবরাহ করার ব্যবস্থা অবলম্বন করা হচ্ছে- জাল জালিয়াতির মাধ্যমে। এই চক্রের নেপথ্যে রয়েছেন কোন কোন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং উপজেলা পর্য্যায়ের একশ্রেনীর নেতৃবৃন্দ বলে জনশ্রæতি রয়েছে।
সরকারি পর্য্যায়ে ধান ক্রয়ের ক্ষেত্রে এই নয়ছয় বিষয়টি “ওপেন সিক্রেট” হবার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, লটারীর মাধ্যমে বাছাইকৃত তালিকা বাতিল করে নতুনভাবে তালিকা প্রণয়নের নির্দেশ দেন। একটি সূত্রের মতে নতুন তালিকা সম্পন্ন হবার পর দুই তালিকাকে উপলক্ষ্য করে গত বুধবার রাজনগরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়েছে। এই বিক্ষোভের নেপথ্যে প্রশাসনে বিদ্যমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেপথ্য বিরোধের আভাস স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শুধু ধান ক্রয় নয়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর কথিত অনিয়মও তার সাথে যুক্ত হয়েছে বলে সুর উঠেছে।
Post Views:
0