স্টাফ রিপোর্টারঃ দীর্ঘ ১৪ বছর পর আজ মৌলভীবাজার সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ওই সম্মেলনে পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নের প্রায় চার শতাধিক তৃণমূলের নেতাকর্মী ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। তবে নেতৃত্ব নির্বাচনে তৃণমূলের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে নাকি উপর মহলের আরোপিত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে এমন শষ্কায় ভোটাররা।
ইতোমধ্যে পদ প্রত্যাশীদের দৌঁড়ঝাপ শুরু হয়েছে তৃণমূল থেকে জেলা ও কেন্দ্রতে। এবারের কমিটিতে নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে নতুন কমিটি গঠিত হবে এমন প্রত্যাশা করছেন দলের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতারা। ক্লিন ইমেজের প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। তাই নতুন মুখ আসতে পারে এই কমিটিতে। এনিয়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে।
অন্যদিকে সম্মেলনকে ঘিরে মৌলভীবাজারে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। দীর্ঘ ১৪ বছর পর উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সম্মেলন হওয়ায় নেতাকর্মীদের প্রাণচাঞ্চল্য অনেকটা বেড়েছে। ইতোমধ্যেই নিজের পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে উপজেলা জুড়ে বিলবোর্ড ও ফেস্টুন ছেয়ে গেছে। শহরে ও তৃণমূলের হাটবাজারে সম্মেলনের আসা সম্ভাব্য অতিথিদের পোষ্টার ব্যাপকভাবে সাঁটানো হচ্ছে। সম্মেলনকে ঘিরে এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রাত পোহালেই সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা।
জানা যায়, সম্মেলনে সভাপতি পদে দুইজন ও সাধারণ সম্পাদক পদে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। মূলত দুইটি বলয়ে সম্মেলনে জানান দিচ্ছেন প্রার্থীরা। আকবর-সুয়েব পরিষদ ও আনকার-সুফিয়ান পরিষদ। এই দুই প্যানেলের প্রার্থীরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানায়, দলের গতিশীলতা বাড়াতে যুবক ও তরুণদের সমন্বয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের নতুন কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়া হবে।
সভাপতি প্রার্থী আকবর আলী ছাত্রজীবণ থেকে ছাত্রলীগের সংগঠক ও মৌলভীবাজার পৌরসভার কাউন্সিলার ছিলেন। পৌর কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগেরও সদস্য পদেও আছেন। তিনি জানান, ‘বর্তমানে রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিরোধী দুর্নীতিবাজরা দখল করে আছে। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করে আসছি স্কুল জীবণ থেকে। এখনও এই আদর্শে অটুট আছি।
এই প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আব্দুল মালিক তরফদার সুয়েব ক্লিন ইমেজের সাথে ছাত্রজীবণ থেকে রাজনীতি করে আসছেন। বিভিন্ন সময়ে দেশ ও দলের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলন করেছেন। সাবেক এই ছাত্রনেতা ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত মৌলভীবাজার সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৮৬ সালে নির্বাচিত হন মৌলভীবাজার সরকারী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি।
আরেক প্যানেলে সভাপতি প্রার্থী বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আনকার আহমদ। তিনি বিগত ২৭ বছর যাবৎ তিনি সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদে ছিলেন। ১৯৯৭ সালে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক থেকে তাঁর যাত্রা শুরু। ২০০৫ সালে তিনি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এপর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনীতির এই দীর্ঘ জীবনে অনেক আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন তিনি।
তবে তিনি বলেন, ‘এতোদিন দলের জন্য কাজ করেছি। বিরোধী দল থেকে শুরু করে সব ধরণের আন্দোলনে দলের নিবেদিত একজন হয়ে কাজ করেছি। আমি কোন টেন্ডারবাজি করিনি, আমি ঠিকাদারী করে অঢেল সম্পদের মালিক হইনি।
তার প্যানেলে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান। তিনি ১৯৯৭ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে দি মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির ৫ বারের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের দুই বারের চেয়ারম্যান।
সার্বিক বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান বলেন, “আমাদের প্রস্তুতি ভাল আছে। সব মিলিয়ে ৪-৫জনের নাম শুনা যাচ্ছে। কাউন্সিলিং হবে না সমাঝোতার ভিত্তিতে হবে তা পরিস্তিতিই বলে দিবে”।
তিনি জানান, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর যে বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্যে রাখতে বলেছেন। আমরা সেই বিষয়গুলোর প্রতি খিয়াল রেখে কমিটি গঠন করবো। কোন দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, মাদকের সাথে জড়িত কাউকেই কমিটিতে স্থান দেয়া হবে না’।