স্টাফ রিপোর্টারঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূর্নীতি বিরোধী চলমান অভিযানের জাল জেলা পর্যায়ে সম্প্রসারিত হবার আভাস ষ্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ জালে আটকা পড়ার আশংকায় মৌলভীবাজারের একশ্রেনীর নেতৃবৃন্দ ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ বিভিন্ন উৎস থেকে ফায়দাভোগীদের চেহারায় কিছুটা বিবর্ণ অবয়ব ধারণ করেছে। অনেকের আবার নির্ঘুম রাত কাটছে। কেউ কেউ জনসম্মুখ থেকে নিজেকে আড়াল রাখার চেষ্টা করছেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা গেছে, গত আগষ্ট থেকে মৌলভীবাজার জেলাতে দু’দকের বিভিন্ন টিমের তৎপরতা অনুভূত হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায়। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মৌলভীবাজার জেলা সদর থেকে দু’দকের অফিস গুটিয়ে হবিগঞ্জ জেলার সাথে সমন্বিত করার পর মৌলভীবাজার জেলায় ক্রমশ: দুর্নীতির মাত্রা বেড়ে যায়। নামে বেনামে অনেকেই কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। সরকারের রাজস্ব পরিশোধ করে বৈধভাবে বড় ধরনে আয় না থাকার পরেও ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতারা পারিবারিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অর্ধ কোটি টাকার মতো খরচ করার নজির রয়েছে। এনিয়ে নেতাকর্মী ও সচেতন মহলে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। আবার অনুসন্ধানে দেখে গেছে অনেক নেতাকর্মী রাতারাতি গাড়ি, বাড়ি ও জায়গার মালিক হয়েছেন। গত ২৯ জুলাই দু’দকের মহাপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে সদর উপজেলা মিলনায়তনে দুর্নীতি বিরোধী গণ শুনানীকালে কোন কোন বক্তা দু’দকের তৎপরাতার ব্যাপারে সমালোচনা মুখর হয়ে উঠলে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। অত:পর আগষ্ট মাস থেকে এখানে দু’দকের তৎপরতা শুরু হয়েছে দুটি ফলক নির্ধারণ করে। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল এবং ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত আওয়ামীলীগ তথা মহাজোটের শাসনামল এবং ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলকে পৃথক ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের পিরিয়ডকে। এসময়ের মধ্যেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অনেক নেতা খাঁছায় ডুকবেন। সরকারি বরাদ্দে নয়-ছয়, জলমহাল-বালু মহাল লুট, কমিশন ভোগ, চাঁদাবাজি, চোরা চালান, পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তার, স্থানীয় সরকার নির্বাচনকালে উপজেলা ও ইউপি চেয়ারম্যান এবং মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করার বাহানায় মনোনয়ন বাণিজ্য, বিভিন্ন সেক্টরে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে উৎকোচ গ্রহণ সহ পরিবহন সেক্টরের চাঁদাবাজী নিয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে দু’দকের অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এছাড়া নিজস্ব অনুসন্ধান টিমও মাঠে আছে।
অনুসন্ধানে শ্রীহট্ট ইপিজেডের গুঞ্জনও আছে। এই অনুসন্ধান জালে ইউ/পি চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে পৌর মেয়র ও কাউন্সিল, উপজেলা চেয়ারম্যান, সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, গণ সংগঠন ও ছাত্র সংগঠনের নেতা , ঠিকাদার এবং নেতার ছদ্মবেশী ব্যবসায়ীরা আটক পড়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষত: রাতারাতি অবস্থা পরিবর্তন কারীদের প্রতিই নজর দেওয়া হচ্ছে বেশী মাত্রায়।
সূত্র বলছে, অনুসন্ধান ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে স্তর নির্ধারণ করা হচ্ছে। প্রথম ধাপে থাকবে ক্ষমতাসীন দলের রাঘববোয়াল। পরবর্তী ধাপে থাকবে অন্যান্যরা।
দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের আশংকায় মৌলভীবাজারের রাঘব গোয়ালরা
