স্টাফ রিপোর্টারঃ
আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া,
করিতে পারিনি চিৎকার।
বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে,
নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ কি শেষ ছাত্ররাজনীতির রক্তপাত। আর কত প্রাণে তোমরা হবে তুষ্ট? বিভিন্ন অপকর্মের মাধ্যমে প্রতিদিনই সংবাদপত্রে শিরোনামা হচ্ছে। একসময়ের ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতার আগে ও পরবর্তী সময়ে নানা সংকটের মুহূর্তে জনমুখী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়ার ইতিহাস রয়েছে এই সংগঠনের। চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, জমি দখল ও ধর্ষণসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করছে না। এসব অপকর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসকে ছাত্রলীগ কলঙ্কিত করছে বলে রাজনীতিক বিশ্লেষক ও অন্যান্য সংগঠনের নেতারা মনে করছেন। তাদের মতে, রাজনীতির মূলধারা থেকে ছাত্রলীগ এখন সম্পূর্ণ বের হয়ে পড়েছে। সমাজের কল্যাণের চেয়ে তারা এখন নিজেদের আখের গোছানোর কাজেই বেশি ব্যস্ত। জানা গেছে, অতীতে যারা এই সংগঠনটির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তারা আজ সবাই বর্তমান ছাত্রলীগের কর্মকান্ডের ওপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এসব অপকর্ম দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। বিশেষ করে সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই নেতাকর্মীরা খুন, হত্যা, ধর্ষণ, মারামারি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। দিন দিন তারা বেপরোয়া হয়ে উঠতে থাকে। সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ছাত্রলীগের অব্যাহত অভ্যন্তরীন কোন্দল, হামলা, চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসের কারণে শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকির মুখে। জাতির ভবিষ্যৎ গড়ার স্থান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে তারা মাদক ও অস্ত্রের গোডাউনে পরিণত করেছে। নিজেদের ও প্রতিপক্ষ ছাত্রদের রক্তে বার বার ক্যাম্পাসগুলোকে রক্তাক্ত করছে। সম্মানিত শিক্ষকরা পর্যন্ত তাদের হাতে নির্যাতনের হচ্ছে। এসব ঘটনা নতুন কিছু নয়। ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসকে বারবার কলঙ্কিত করেছে তারা। জবি’তে ধর্ষণের সেঞ্চুরি ও এমসি কলেজের ছাত্রাবাস পুঁড়িয়ে উল্লাস করে ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে কলঙ্কজনক সৃষ্টি করেছে ছাত্রলীগই। একই ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরেও সমানভাবে চলছে তাদের অব্যাহত তান্ডব। ছাত্র-শিক্ষকের রক্ত ঝড়ানো, খুন, ধর্ষণ, দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কোন্দল ও সন্ত্রাস দিয়ে ছাত্রলীগের ইতিহাস পরিপূর্ণ। যা জনগণ বছরের পর বছর দেখে আসছে। অথচ এসব সন্ত্রাসের জন্য কোনো দৃষ্টান্তমূলক বিচার জাতি দেখেনি। ফলে বর্তমানে ছাত্রলীগের নৃশংসতার মাত্রা আরো বেড়ে যাচ্ছে।