স্টাফ রিপোর্টারঃ দীর্ঘ এক দশক পর কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল ছিলো ১৫ই জুন। সে লক্ষে সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন ছিলো। কাউন্সিলাররাও ভোট দিতে এসেছিলেন। কিন্তু জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে আকস্মিক ঘোষনা আসে, অনিবার্য কারণবশত কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সম্মেলন স্থগিত। এতে ক্ষোভে ফুর্সে ওঠেন হাজারো নেতাকর্মীসহ আয়োজকরা। উপজেলা বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জেলা কমিটির এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। এর জন্য তারা দায়ী করছেন কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদকে। তাৎক্ষনিক ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা জুনেদকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে দল থেকে বহিষ্কারের দাবী জানান। এদিকে সম্মেলন ও কাউন্সিল সম্পন্ন করতে না পারায় উপজেলা আহ্বায়ক থেকে পদত্যাগের ঘোষনা দেন অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা।
জানাযায়, সর্বশেষ ২০০৯ সালে কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে কুলাউড়ায় এ দলের রাজনীতি ছিলো অনেকটা খাঁদের কিনারায়। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ক্লিন ইমেজ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালানো হয়। সে লক্ষ্যে প্রায় এক দশক পর ১৫ই জুন ছিলো দলের উপজেলা শাখার কাউন্সিল ও সম্মেলন। কিন্তু আগের দিন অর্থাৎ ১৪ই জুন প্রতিদ্বন্ধিতা থেকে সরে দাঁড়ান সভাপতি প্রার্থী কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জয়নুল ইসলাম জুনেদ। তাঁরা কাউন্সিলে ভরাডুবির টের পেয়েই জেলা বিএনপিকে সম্মেলন স্থগিতে কলকাঠি নাড়েন বলে নেতাকর্মীদের দাবি। এসময় ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য দেন, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন ভুইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক রফিক আহমদ, কাউন্সিলে সভাপতি প্রার্থী জয়নাল আবেদীন বাচ্চু ও এম এ মজিদ, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রেদওয়ান খাঁন, জয়নাল আবেদীন খাঁন, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী ময়নুল হোসেন বকুল, বদরুল হোসেন খাঁন, দেলোয়ার হোসেন, সুফিয়ান আহমদ (প্রিন্স), আব্দুস সালাম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, হামলা-মামলা, জেলজুলুম উপেক্ষা করে দল গোছাতে ১৩ ইউনিয়ন ও পৌরসভায় কাউন্সিল করেছি। কিন্তু উপজেলা কাউন্সিলে জেলার এমন সিদ্ধান্তে আমরা হতবাক। যার কারনে দলই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। মূলত জাপা থেকে বিএনপিতে আসা সভাপতি প্রার্থী জুনেদের কারনেই এই কাউন্সিল পন্ড। আমরা তাকে অবাঞ্চিত করলাম এবং তাকে দল থেকে বহিস্কারের জোর দাবী জানাচ্ছি।
অবাঞ্চিত ঘোষণা প্রসঙ্গে কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ সাংবাদিকদের বলেন, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিলো গত ১৩ই জুন। আমি ১৪ই জুন প্রত্যাহারের আবেদন করি। আহ্বায়ক কমিটি তা গ্রহণ করেছেন, এটা সিস্টেমের মধ্যে পড়ে না। এছাড়াও কাউন্সিলের কোন দাওয়াত কিংবা কার্ড আমাকে দেয়া হয়নি। বিষয়টি আমি জেলা কমিটিকে জানিয়েছি। জেলা কি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সে ব্যাপারে আমি জানিনা।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা বলেন, বিএনপিকে ক্লিন ইমেজ নিয়ে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করেছি। জেলা বিএনপির সভাপতি-সম্পাদক আমাকে ডেকে নিয়ে কাউন্সিল বাতিল ঘোষণা দিয়ে আমার হাতে একটি প্রেসরিলিজ ধরিয়ে দেন। এতে উজ্জীবিত উপজেলা বিএনপিসহ আমরা মর্মাহত হয়েছি এবং আমি আহবায়কের পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পাশাপাশি জেলা বিএনপির সভাপতির পদত্যাগ দাবী করছি। তিনি কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ প্রসঙ্গে বলেন, জুনেদ আহ্বায়ক কমিটির একজন নীতিনির্ধারক। কাউন্সিল ও সম্মেলন সফল করতে উনি নিজেই ভূমিকা রাখার কথা। উনাকে কে দাওয়াত দিবে? আহ্বায়ক কমিটির একজন সদস্য এবং কাউন্সিলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নেতা যদি নিজেই এসে একটি লিখিত আবেদন দেন সেটা কি আমাদের রাখা উচিত না।